You dont have javascript enabled! Please enable it! ব্রহ্মগাছা যুদ্ধ, সিরাজগঞ্জ - সংগ্রামের নোটবুক

ব্রহ্মগাছা যুদ্ধ, সিরাজগঞ্জ

ব্রহ্মগাছা গ্রামটি সিরাজগঞ্জ জেলার রায়ত থানার হাঁট পাদাসী ইউনিয়নে অবস্থিত। ১৯৭১ সালে মুক্তিবাহিনী ভদ্রঘাটে পাকহানাদার বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে লুপ্ত হওয়ার পর জুনের শেষ অথবা জুলাই এর প্রথমদিকে ব্রহ্মগাছায় অবস্থান নেয়। এখানে তারা ৪২টি নৌকার মাধ্যমে এই এলাকা মুক্ত রাখে এবং অনেক নতুন সদস্য অস্ত্র চালনা শিক্ষা গ্রহণ করে। কিন্তু নাম না জানা এক রাজাকার মুক্তিবাহিনীর এই অবস্থান সম্পর্কে পাকহানাদার বাহিনীকে জানায়। এই সময় মুক্তিযোদ্ধারা রায়গঞ্জ থানার বগাদাহ নামক স্থানে অবস্থান করেছিল। ভোরের দিকে মুক্তিযোদ্ধারা খবর পায় যে, পাকসেনারা তাদের অবস্থান থেকে ৩ কিঃ মিঃ দূরে মুক্তিবাহিনী আক্রমণ করার জন্য একত্রিত হচ্ছে। এমতাবস্থায় পলাশ ভাংগা যুব শিবিরের পরিচালক বা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ মির্জা, গাজী লুৎফুর রহমান (অরুণ) এবং ২ নং কোম্পানীর কমান্ডার ইপিআর এর মোজহারুল এর সাথে যুদ্ধের কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হয় যে, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক মন্টু ভারত থেকে আনা ২ ইঞ্চি মর্টার সহ মোজাহারুলের ১ প্লাটুন, গাজী লুৎফুর রহমান ১ প্লাটুন এবং গার্ড কমান্ডার হোসেন আলী ১ সেকশন যোদ্ধা নিয়ে পজিশনে থাকবে। অন্যদিকে ক্যাম্পের সিএনসি সোহরাব আলী সরকার ১ নং কোম্পানী কমান্ডার সেনাবাহিনীর সদস্য বাবুয়ার মোঃ সামাদ তার কোম্পানী নিয়ে পড়ে যোগ দিবে এবং অন্য কোম্পানী এখানেই অবস্থান করবে। এভাবে সিদ্ধান্ত শেষে সবাই নিতে শুরু করে। গার্ড কমান্ডার হোসেন আকস্মিক গুলি শুরু করলে লুৎফুর রহমান তা বন্ধ করার নির্দেশ দেন। কারণ পাকহানাদার নদীর ওপারে অবস্থান করায় গুলি নষ্ট হওয়ার আশংকা দেখা দেয়। তাই মর্টারি ছিল তাদের একমাত্র ভরসা। অতপর সেলের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পাকহানাদার বাহিনী পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। তবে এযুদ্ধে উভয়পক্ষে হতাহত হওয়ার কোন সংবাদ পাওয়া যায়নি।
[৫৯৭] চাঁদ সুলতানা কাওছার

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত