You dont have javascript enabled! Please enable it! বৈদ্যের বাজার আর্মি ক্যাম্প অপারেশন, নারায়ণগঞ্জ - সংগ্রামের নোটবুক

বৈদ্যের বাজার আর্মি ক্যাম্প অপারেশন, নারায়ণগঞ্জ

আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে একদিন বিকালবেলা নারায়ণগঞ্জ বৈদ্যের বাজার থানার সামনে পাক আর্মি ক্যাম্পে অপারেশনের নেতৃত্ব দেন আব্দুল মালেক। পাক আর্মিদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের এটি ছিল মুখোমুখি সংঘর্ষ। মুক্তিযোদ্ধারা বীরদর্পে পাকসেনাদের গুলির জবাব দেন। নয়গাঁও থেকে নৌকায় চড়ে মুক্তিযোদ্ধা কাউসার, সোনারগাঁও থানা কমান্ডার আব্দুল মালেক, সহকারী কমান্ডার হাবিবুল্লাহ, সুলতানউদ্দীন মোল্লা বাদশা, সানাউল্লাহ, বাতেন, মতিন, দাউদ, মনির, মো. আলীর গ্রুপ, আউয়াল, মজিবুর রহমান, সোহেলসহ সোনারগা পার্কের সামনে আসেন। এর ৫/৭ দিন পূর্বে সহকারী কমান্ডার হাবিবউল্লাহ অপারেশন স্থল রেকি করেন। প্রতিদিন পাকসেনারা ৪/৫ জন বেবিট্যাক্সতে চড়ে বৈদ্যেরবাজার থেকে মোগপাড়া চৌরাস্তা পর্যন্ত টহল দিত। পার্কের আধ মেইল দূরে পেতারগার পুলের এক পার্শ্বে মাইন পুঁতে অন্য পাশে তার দিয়ে কলাগাছের সাথে বেঁধে সেখান থেকে সরে এসে পার্কের জঙ্গলে এমবুশ করে থাকেন। আধঘণ্টা পরে পাকআর্মির টহল দেয় বেবিট্যাক্সি ঐ স্থানে আসামাত্র মাইনটি বাস্ট হলে দু’জন পাকআর্মি মারা যায়। ২/৩ জন পাকআর্মি দৌড়ে পালায়। এই ঘটনার পর গ্রামবাসীদের ওপর অত্যাচার হবে চিন্তা করে মুক্তিযোদ্ধারা সোনারগাঁ পার্ক থেকে পানাম বাজার পর্যন্ত রাস্তার মধ্যে মাইন পুঁতে রাখেন। এরপর রাস্তার পাশে পজিশন নেয়। পাকসেনারা সোনারগাঁও জাদুঘরের কাছে কালীবাড়ি দিয়ে পানামা আসে। চারদিক থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ করে এবং এলাকার বাড়িঘর জ্বলিয়ে দেয়। দোকানের তালা ভেঙে দোকান লুট করে। সোনারগাঁ পার্কের রাস্তা দিয়ে পানাম বাজারে প্রবেসজ করে। এ সময় ২/১ টা মাইন বিস্ফোরিত হয়। এমবুশ করা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে গোলাবারুদ (এল এম জি ও থ্রি-নট রাইফেলের বুলেট) পৌছে দেবার সময় সুরেশ পালের বাড়ির সামনে শমসুজ্জামান মজনু (গোয়ালদি) পাকসেনাদের গুলিতে শহীদ হন। মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের সাথে প্রায় দুই/আড়াই ঘন্টা করে পুছু হটে যান। এই অপারেশনের সংবাদ ২৭ আগষ্ট কলকাতার ‘যুগান্তর’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
[১১০] রীতা ভৌমিক

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত