বেগুনবাড়ি রেলসেতু আক্রমন, জামালপুর
বেগুনবাড়ি ময়মনসিঙ্ঘ জেলার সাবেক জামাল্পুর মহকুমা বর্তমান জামালপুর জেলার বাহাদুরবাদ ঘাটের নিকটবর্তী একটি গ্রাম। এই গ্রামের মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া একটি খালের উপর ছোট রেল সেতুর অবস্থান। মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে এই রেল সেতু ধ্বংস প্রাপ্ত হয়।
১৯ জুলাই ডালুতে অবস্থানর এফ এফ কোম্পানীর কোম্পানি কমান্ডার আবদুল গনির মুক্তিযোদ্ধা দলের উপর ময়মনসিং বাহাদুরবাদঘাট রেল লাইন ধ্বংসের দায়িত্ব অর্পণ করেন। এই দায়িত্ব পালনে কোম্পানির সহ অধিনায়ক মির্জা নজরুল ইসলাম বেগ গ্রুপ কমান্ডারের দায়িত্ব নিয়ে ৩০ থেকে ৩৫জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দল নিয়ে বাংলাদেশ প্রবেশ করে।
২০ জুলাই নজরুল ইসলাম বেগের নেতৃত্ব মুক্তিযোদ্ধা দলটি ঢালু সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। স্থানীয় পরিস্থিতি বিবেচনার দলের অধিনায়ক বাহাদুরবাদ ঘাট রেলস্টেশনের কাছা কাছি রেগুনবাড়ি রেল সেতুটি ধ্বংসের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনার প্রস্তুতি হিসেবে এই মুক্তিযোদ্ধা দলটি প্রাথমিকভাবে নারায়খোলা নামক স্থানে তাদের হাইদ আউট স্থাপন করে। এই হাইড আউটের অবস্থান ছিল বেগুনবাড়ী সেতু থেকে ১০ কি মি দূরে। মুক্তিবাহিনীর এই দলটির সাথে অস্ত্র হিসেবে ছিল ৫টি রাইফেল, ১ টি এলএমজি, ১ টি এসএমজি ও প্রয়োজনীয় এক্সপ্লোসিভ। ২০ জুলাই মধ্যেরাতে মুক্তিবাহিনী সেতুর কাছাকাছি অবস্থান নিয়ে ভোর ৫ টায় এক্সপ্লোসিভ এর সাহায্যে বেগ্গুনবাড়ি সেতু ধ্বংস করে। সেতু ধ্বংসের শব্দে
টহলরত পাকবাহিনী মুক্তিবাহিনীর অবস্থানকে নির্দিষ্ট করে পাল্টা আক্রমণ চালায়। পাকবাহিনীর আক্রমনে মুক্তিবাহিনীর সদস্যগণ সরাসরি যুদ্ধে জড়িত না হয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদে অবস্থান ত্যাগ করেন।
এই যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- মির্জা নজরুল ইসলাম বেগ,ইদ্রিস আলি,আব্দুল গনি, আলী হোসেন,নাজমুল হক , ফজলুল হক ,আবুল কাশেম,নাজমুল হুদা,আবদুর রাজ্জাক,সুরেশ , জালাল উদ্দিন,সাইদুল হক প্রমুক।
বেগুন বাড়ির আক্রমণ ছিল মুক্তিবাহিনীর একটি পরিকল্পিত আক্রমণ। সংক্ষিপ্ত এই যুদ্ধে মুক্তিবাহিনী তাদের মূল লক্ষ্য বেগুনবাড়ি সেতু ধ্বংস করে রেল যোগাযোগ ব্যাহত করতে সক্ষম হয়। এটি ছিল মুক্তিবাহিনীর একটি সফল আক্রমণ।
{৫৯৫} ফিরোজ খায়রুদ্দিন
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত