You dont have javascript enabled! Please enable it!

বেলাব প্রাইমারি স্কুলে মুক্তিবাহিনী ক্যাম্পে পাকবাহিনীর আক্রমন, নারায়নগঞ্জ

২৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় নারায়নগঞ্জের রুপগঞ্জ থানার বেলাবো প্রাইমারি স্কুলের মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পের পাশ দিয়ে চারতালু গ্রামের রাজাকার মতিউর রহমান বোরখা পরে মহিলা সেজে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান সম্পর্কে অবগত হয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের পথ রোধ করে জিজ্ঞাসা করলে বাবার অসুখ দেখতে যাচ্ছি এইরকম বলে। আগেরদিন এই রাজাকার দুপুর ৩টায় রেকি করে নরসিংদী পাকবাহিনীর ক্যাম্পে সংবাদ দেয়। বেলাবো প্রাইমারি স্কুলে মুক্তিবাহিনী ক্যাম্পটিতে কয়েকশো মুক্তিযোদ্ধা অবস্থান করতেন। এই ঘাঁটি থেকেই তাঁরা বিভিন্ন অপারেশন করতে যেতেন। রাত ১২টায় পাকআর্মিরা বেলাবো প্রাইমারী স্কুলে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে নজরুলের গ্রুপের মুক্তিযোদ্ধাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। ক্যাম্পে ডিউটিরত মুক্তিযোদ্ধা মো গোলাম রশিদ বকুল। পাক আর্মি ধান ক্ষেতের ভেতর দিয়ে ক্রলিং করে অগ্রসর হতে দেখেই বকুল বুঝতে পেরেছিলেন এরা শত্রু পক্ষ। তৎক্ষণাৎ তিনি ওদের উদ্দেশ্যে গুলি করেন। গুলির শব্দে ঘুমন্ত মুক্তিযোদ্ধারা জেগে দ্রুত অস্ত্র গুলো সরিয়ে ফেলেন। অগাস্টিন প্যারেলা,সাইম সরকার,মো সিরাজুল ইসলাম,মো রেজাউল করিম,ডেবি রোজারিও,মো নাছির উল্লা খান,মো আবুল বাসার ,মো সোবেদ আলো, জোসেফ গোমেজ,মো ফকির চান মৃধা,পরিমল ডি কস্তা,লুইস পালনা,হেমেন্দ্র চন্দ্র নাগ,কমল রোজারিং,মো কাজি শাহাজাহান,রামচন্দ্র দত্ত,আলাউদ্দিন মিয়া সহ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা প্রানপনে লড়াই করে শত্রুর মোকাবেলা করেন। শক্তিশালি অস্ত্রসস্ত্র দিয়ে পাকসেনারা মুক্তিশিবিরের ওপর প্রচন্ড গোলাগুলি করতে থাকে। মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার বাহিনীর শক্তির সাথে আর পেরে না ওঠে পানির মধ্যে অস্ত্রগুলি ঢুবিয়ে রাখে এবং আত্নগোপনে চলে যায়। কিন্তু আর্মিদের হাতে ধরা পড়েন অগাস্টিন পেরোলা নামে এক মুক্তিযোদ্ধা। পাক আর্মি তাঁকে নরসিংদী নিয়ে অনেক নির্যাতন করে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরি দিয়ে কেটে লবন লাগিয়ে দেয়। এরপরও অগাস্টিনের মুক থেকে সহযোদ্ধাদের একটি নামও বের হয় না দেখে আরোও নির্যাতনের পর হত্যা করে।
[১১০] রীতা ভৌমিক

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!