You dont have javascript enabled! Please enable it!

বিষয়খালীর যুদ্ধ, ঝিনাইদহ

মুক্তিযুদ্ধের প্রথম দিকের প্রতিরোধ যুদ্ধগুলোর মধ্যে ঝিনাইদহ জেলার বিষয়খালীর যুদ্ধ ছিল অন্যতম।এটি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে প্রথম সস্ত্রস প্রতিরোধের ঘটনা.১৯৭১ সালের ১ এপ্রিল বিষয়খালি বাজারে এই যুদ্ধ সঙ্ঘটিত হয়.১ এপ্রিল বৃহপতিবার মূলত মুক্তিযোদ্ধাদের চতুর্মুখ ফায়ারে বেগবতী নদীর দক্ষিণ তীরে পাকসেনারা বাঁধাপ্রাপ্ত হয়।পাকসেনারা এ স্থানকে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি শক্তিশালী অবস্থান হিসেবে ধরা হয়। সকালে আনুমানিক দশ ঘটিকায় পাকসেনারা আধুনিক সমরাস্ত্রে ফায়ার চালালে মুক্তিযোদ্ধারা ৩০৩ রাইফেল দিয়েই তাদের বাঁধা দেয়।সারাদিন যুদ্ধ চলতে থাকে।বিকালে আনুমানিক ৪টায় পাকবাহিনীরা যুদ্ধ বন্ধ করে দেয় এবং হতাহতদের বহন করে যশোর সেনানিবাসে। পশ্চাদসরন করতে বাধ্য হয়।এ সংঘর্ষে বহু পাকসেনা হতাহত হয়।তবে তাদের সঠিক সংখ্যা জানা যাউওনি।কনভয়াটি ফেরার পথে যাবতীয় লাশ বহন করে নিয়ে যায়।তবে সন্ধ্যা এল্কার লোকজন নদীর দক্ষিণ পারে রক্তের ছাপ ও লাশ টেনে নেয়ার চিহ্ন পাওয়া যায় এবং এ দেখে অনুমান করা যায় প্রচুর হতাতের।মুক্তিবাহিনীর পক্ষে ছয়জন শহিদ হন।ব্রিজের পূর্ব দিকে ইপিআর সদস্য শামসুল মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শাহাদাত বরণ করেন। এলাকার পশ্চিম দিকের সরবডানে মরিচায় একই সাথে চারজন শহীদ হন।এছাড়া আরোও একজন শহীদ হন।এই যুদ্ধে শহীদ ততকালীন ছাত্র জনাব এম এন এ ইকবাল আনোয়ারুল্ল ইসলামের পুত্রে গোলাম মোস্তফার নামে বর্তমানে শহ শহীদ মোস্তফা কবরস্থান রয়েছে.৬ এপ্রিয়লের পর থেকে পাকিস্থান সেনাবাহিনী আকাশ ও জলপথে ব্যাপক ভাবে সৈন্য অরসশ যশোর সেনানিবাসে আনতে শুরু করে।কিন্তু তখন বাঁধা দেয়ার মত প্রয়োজনীয় অস্ত্র বা সামরথ ছিল।বিষয়খালি সংঘর্ষের পর থেকেই পাকিস্থানি ক্ষিপ্রগতিতে ব্যাপকভাবে সৈন্য ও অস্ত্রসস্ত্র যোশোর সেনানিবাসে আনতে শুরু করে। সে সময় আকাশ বা জলপথে পাকিস্থানী বাহিনীকে বাঁধা দেয়ার মত বিমান জলযান কিছুই ছিল না/ অসহারের মত দৈনিন্দ পরিস্থিতি ভারতের সমন্বয় অফিসাররের কাছ থেকে টেলিফোনে জানিয়ে ভারি অস্ত্রের জন্য তাগিদ দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করুনিয় ছিল না।
প্রথম প্রচেষ্টায় ব্যর্থ পাকসেনারা আরো অস্ত্র ও জনবসহ ১৫ এপ্রিল পুনরায় বিষয়খালীর দিকে অগ্রসর হয়।এবার মুক্তিবাহিনীর পক্ষে তাদের থামানো সম্ভব হয় নি।ফলে বিষয়খালীর ব্রিজ দখল করে পাকসেনারা ঝিনাইদহ অভিমুখে যাত্রা করে।
[৫৭] রিয়াজ উদ্দিন

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!