বীরবসুন্ডায় আম্বুশ, টাঙ্গাইল
টাইঙ্গাইল জেলার কালাহাতি থানার উত্তর পূর্ব বীরবাসুন্ডা অবস্থিত.১৮ জুলাই ভোরে কালাহাতি থেকে দুই কোম্পানি পাকিস্থানী দেওপাড়ার দিকে এগুতে থাকে। তাঁরা কস্তরীপাড়া বাজার পর্যন্ত এগিয়ে যায়।ভোর পাঁচটায় মুক্তিবাহিনী শত্রুর এগিয়ে আসার খবর পায়।সঙ্গে সঙ্গে শত্রুর উপর আক্রমণ চালানোর কৌশল ঠিক করে দেওপাড়া থেকে দুই কিমি এগিয়ে বীরবাসুন্ডা ও তাঁর আশেপাশে ঘাপটি মেরে তাঁরা শিকারের অপেক্ষায় বয়সে থাকে।
পাকিস্থানারা খুব সতর্কতার সাথে প্রায় দেড় কিলোমিটার লম্বা সারিতে খুবই ধীর গতিতে,চতুর্দিকে চোখ রেখে দেওপাড়ার দিকে এগোতে থাকে। শত্রু দেওপাড়ার ৭০/৮০ মিটার দূরে থাকতে মুক্তিবাহিনী প্রথম আঘাত করে মুক্তিবাহিনীর এতটা কাছে এসে গেছে।তা শত্রু টেরই পায় নি
মুক্তিবাহিনীর অচমকা ছোড়া গুলিতে মুহূর্তে ৮/১০জন শত্রু গুরুতর আহত হয়। শত্রুর উপর গুলি আসে দক্ষিণ দিক থেকে।ফলে দিশেহারা শত্রু দৌড়ে রাস্তার উপর পজিশন নেয়ে দক্ষিণ ও সামনের দিকে যখন গুলি ছোড়া শুরু করে ঠিক তখন উত্তর দিকে অর্থাৎ একেবারে পিছন থেকে ৬ জন অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধা ঝাকে ঝাকে গুলি ছুড়ে গা ঢাকা দেয়।এতে ১০জন শত্রু নিহত ও ২০জন আহত হয়।শত্রু আরো এগিয়ে যাবার শক্তি ও সাহস হারিয়ে ফেলে।তারা আস্তে আস্তে পিছনে সরে যেতে থাকে।পিছিয়েও কিন্তু তাদের দুরভোগ ও বিড়ম্বনা শেষ হল না। কার ব্রীরবাসুন্ডা ও কত্রীপাড়ার পাশে চারটি দল শত্রু নিধরের অপেক্ষায়।দেওপাড়ার দিকে মুক্তিবাহিনী শত্রুকে খুব কাছে পেয়ে তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। পাকিস্থানিনা মার খেয় কালাহাতির দিকে ছোটে বীরবাসুন্ডার কাছাকাছি এসে তাদের মধে দেখা দেয় শীতলতা ও বিশৃঙ্খলা। কে কাকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যাবে,এ নিয়ে তাদের মধ্যে শুরু হয় প্রতিযোগীতা ও ঠেলা ঠেলি।কেউ কাউকে মানছে না।কেউ আরো হুকুম তামিলও করছে না।শত্রুর এমন অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য এনে দেয় সুবর্ণ সুযোগ।২০/৪০ জন শত্রু মুক্তিযোদ্ধাদের ৬০/৭০ মিটারের মধ্যে এসে এখানেও অনুরূপ মার খায়। বীরবাসুন্ডায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় ১০০ জন শত্রু কিছুক্ষনের জন্য আটকা পরে।
এই এমবুশে প্রায় ৫০ জন পাকিস্থানী নিহত হয়।উদ্ধার করা হয় অনেক অস্ত্র ও গোলাবারুদ। মুক্তিযোদ্ধাদের তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার হয়নি।
[৫৯৫] ফিরোজ খায়রুদ্দিন
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত