বুড়িঘাটের যুদ্ধ, রাঙ্গামাটি
৮ এপ্রিল, ১৯৭১ সাল।দুপুর নেমেছে।মুহুমুহু গর্জে উঠতে লাগল কামান ও মর্টার।বুড়ি ঘাটের দিকে আসছে ৭টি স্পিড বোট ও দুইটি লঞ্চে আনুমানিক দুই কোম্পানী সৈন্য। এরা পাকিস্থান সেনাহাইনীর দ্বিতীয় কমান্ড ব্যাটালিয়নের কোম্পানি।এদের লখ্য বুঘাটের মুক্তিবাহিনীর নতুন পরিরক্ষা ঘাটি।সবচেয়ে আগে তীব্র গতিতে এগিয়ে আসছে দুটি লঞ্চ ও দুটি স্পিড বোট।অগুলোর মধ্যে বসানো হয়েছে তিন ইঞ্চি মর্টার আর অনেক গুলি মেশিন গান ও রাইফেল। সেগুলো থেকে শেল আর গুলি ছুটে আসছে ঝাকে ঝাকে।গুলাগুলির শব্দে আকাশ মাটি ফেটে যাচ্ছে নদীর পানিতে উঠেছে বিষম আলোড়ন।তারা এগিয়ে যাচ্ছে মহাল ছড়ির দিকে। উদ্দেশ্য,রাঙ্গামাটি-মহালছড়ির জলপথ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের উৎখাত করে নিজেদের অবস্থান প্রতিষ্টিত করা।বুড়িঘাট এলাকায় চিংড়িখালের দুপারে মুক্তিসেনারা যে প্রতিরক্ষা ঘাঁটি করেছে সেখানে লোকবল খু কম।অস্ত্র-সস্ত্র নেই বললেইন চলে। কিন্তু আছে অসীম মনোবল আর সাহস।স্বাধীনতার অনির্বাণ শিখায় উৎসারিত বয়ে যায় অমরতার দিকে।তা চির অনিশেষ।তাদের অবস্থানের দিকে ছুটে আসতে লাগল ঝাকে ঝাকে মেশিনগানের গুলি আর মর্টার শেল।তীব্র গোলা গুলির ফলে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান চিহ্নিত হয়ে গেলো।তাই প্রতিরক্ষা ঘাটিতে বিপর্যয় সৃষ্টি হল।ল্যান্স নায়েক রউফ দেখলেন এভাবে থাকলে সকলেই মারা পড়বেন।তিনি সৈনিকদের প্সহচাদসরনের নির্দেশ দিএল, সহযোদ্ধারা অস্ত্র নিয়ে পিছিয়ে গেলো। শত্রু তখনো এগুচ্ছে। এবার মুন্সি রউফ নিজে পরিখায় দাঁড়িয়ে গেলেন।মেশিনগানটি তুলে ফেললেন উঁচুতে,অনবরত গুলি করতে লাগলেন স্পীড বোটগুলিতে। শত্রু সৈন্যদের বিরুদ্ধে তিনি একাই লড়ে গেলেন। তাঁর এরকম দুরদান্ত গুলিবর্ষণের ফলে সাতটি স্পিড বোটই ডুবে গেল এবং সব আরহী পাকসেনা হতাহত হল।এই আকস্মিক ক্ষতিতে শত্রুসেনাদের মনোবল ভেঙ্গে পড়ে।পিছনের দুটি লঞ্চ তখন পশ্চাদসরন ক্রে রউফের মেশিনগানের রেঞ্জের বাহিরে চলে যায়।নিরাপদ দুরত্বে অবস্থান করে সমগ্র প্রতিরক্ষা এলাকার উপর মর্টারের গোলাবর্ষণ চলতে থাকে একই ভাবে লঞ্চ দুটি থেকে।শত্রুর একটি মর্টারের গোলা এসে সরাসরি ল্যান্স নায়ক অউফের উপর পরে,ছিটকে পড়েন রউফ এবং শহীদ হন
[৩৫] লে কর্নেল এস আই এম নুরুন্নবী খান বীরবিক্রম(বরখাস্ত)
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত