You dont have javascript enabled! Please enable it!

বুডিপোতার যুদ্ধ, মেহেরপুর

দখলদার পাকিস্থান সেনাবাহিনীর ত্রীব্র আক্রমণের মুখে প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়লে ১৬ এপ্রিয় দক্ষিণ পশ্চিম রনাঙ্গের সদর দপ্তর চুয়াডাঙ্গা থেকে সরিয়ে মেহেরপুরের ইচাখালি বিওপিতে স্থানান্তরিত করা হয়।ইস্ট পাকিস্থান রাইফেলস এর অনেক সদস্যই ১৭ এপ্রিল মুজিব নগর শপত অনুশটানে যান। আবার বেশ কিছু সদস্য সীমান্ত পেরিয়ে বেতাই লাল্বাজারে একত্রিত হন।প্রতিরোধযুদ্ধে অংশগ্রহনকারি আনসার,মুজাহিদ,ছাত্র-যুবকরাও ১৭ তারিখ থেকে বিভিন্ন পথে ভারতে প্রবেশ করে মতুন করে যুদ্ধ প্রস্তুতি গ্রহনের জন্য।সীমান্তবর্তী বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় কেন্দ্র,অভ্যারথনা কেন্দ্র, প্রশিক্ষণকেন্দ্র খোলার ব্যস্ততাতেই কাটে এপ্রিলের শেষার্ধ এমনকি মে মাসের প্রথমার্ধ পর্যন্ত। কিন্তু এরই মাঝে ১৮ এপ্রিল পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রবেশ ঘটে মেহেরপুরে। শহর থেকে গ্রামাঞ্চলে তাদের অভিযান শুরু হলে তা প্রতিহত করারও প্রয়োজনীতা দেখা দেয়। দেশত্যাগী বিভিন্ন রেজিমেন্টের বাঙালি সৈনিক,ইপিআর,আনসার,পুলিশ সদস্যদের একত্রিত করে এ বি ও সি নামের তিনটি কোম্পানীতে বিভক্ত করে ৮ ও ৯ সেক্টরের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে দেয়া হয়।সি কোম্পানীর সৈনিকেররা থাকে বেতাই সাব সেক্টরের অধীনে দাড়ি।এই সৈনিকদেরই বেশ কয়েকটি সেকশন এপ্রিলের ২০ তারিখ থেকেই মেহের পুরে সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত টহল দেয়া শুরু করে। ২১ এপ্রিল বেতাই থেকে সুবেদার মালেকের নেতৃত্বে নিয়মিত একটি টহল দল আসে বুড়িপোতা গ্রামে। ঐ গ্রামের এক পুকুর পাড়ে তাঁরা অবস্থান গ্রহণ করে।পারশবর্তী শালিখা গ্রামে মুসলীম লীগার লতিফ মোল্লা( পরে রাজাকার ক্যাপ্টেন) ঐ দি মেহের পুর থেকে একদন পাকসৈন্য নিয়ে নিজ এলাকায় আসে স্বাধীনতার পক্ষে মানুষদের নিদরন করার জন্য। বুড়িপোতা পুকুর পাড়ে এলে তাঁরা মুক্তিযোদ্ধাদের এমবুশে পড়ে যায়। শুরু হয় উভয় পক্ষের গুলিবরষন। প্রায় এক ঘন্টা স্থায়ী এই যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর একজন নিহত এবং দুই থেকে তিনজন আহত হয়। শালিখা গ্রামে আনসার ইউসুফ আলী এবং গোভীপুরের আবুল কাসেম নামের একজন সাধারণ মানুষ শহীদ হন।এ যুদ্ধের পর সীমান্ত এলাকায় টহল অব্যাহত রাখলেও মুক্তিযোদ্ধারা যথেষ্ট সাবধানী হয়ে ওঠে।বুড়িপোতা যুদ্ধ সম্পর্কে ২২ এপ্রিল ভারতীয় পত্রিকা যুগান্তরে লেখা হয়ঃ গতকাল বিকেলেই মুক্তিফৌজ বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার সীমান্ত বর্তী বুড়িপোতা,গরিবপুর ও দৌলতপুর দিয়ে তিন পথে এক সঙ্গে সাড়াসি আক্রমণ চালিয়ে।এই সাড়াসি আক্রমণের উদ্দেশ্য হল-মেহেরপুর চুয়াডাঙ্গা অঞ্চল দখল করা।এ দিনের যুগান্ত আরোও জানায়ঃ মুজিব নগর আক্রমণের চেষ্টা ব্যর্থঃ এদিকে গতকাল মঙ্গলবার পাকিস্থানী সৈন্যরা মুজিবনগর আক্রমণের পরিকল্পনা করেছিল।কিন্তু বিকেল থেকে প্রবল ব্রৃষ্টি হওয়া এবং রাস্থাঘাট চলাচলের সুবিধাজনক না হওয়ায় পাক বাহিনীর উদ্দেশ ব্যর্থ হয়ে যায়।
[১০৩] রফিকুর রশীদ

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!