You dont have javascript enabled! Please enable it! বালিউড়া যুদ্ধ, ঢাকা - সংগ্রামের নোটবুক

বালিউড়া যুদ্ধ, ঢাকা

ইদ্রিস কোম্পানির প্রথম আক্রমণ ছিল বালিউড়া বাজারে।এখানে মুক্তিযোদ্দজা পাকবাহিনীর মধ্যে সম্মুখ যুদ্ধ হয়।মুক্তিযোদ্ধারা বালিউড়া পূর্বদিকের সড়কের পাশে ওঁ কাচারী পুকুরে ওঁৎ পেতে থাকলে মুক্তিযোদ্ধারা গুলি ছোড়ে।মুক্তিযোদ্ধারা ছিল মাত্র ৬জন। প্রত্যেকের নিকট ছিল একটি করে রাইফেল এবং ২০ রাউন্ড করে গুলি।মুক্তিযোদ্ধাদের গুলি ছোরার সাথে সাথে পাক বাহিনী ঝাকে ঝাকে গুলি ছুড়তে থাকে। বাংলা বাজার মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে লোক পাঠিয়ে খবর দিলে আরো অস্রত্র,গোলাবারুদ ও সহযোদ্ধা এলো ২ ইঞ্চি মটারের গোলা এবং থেকে থেকে একসাথে একসাথে রাইফেল চালনা শুরু করায় এক সময় শত্রুপক্ষের গোলাগুলো থেমে যায়। তৎপর পাকবাহিনী বালিউড়া ছেড়ে চলে যায়।পরদিন মুক্তিযোদ্ধারা বালিউড়ায় ক্যাম্প স্থাপন করে। এরপর পাকসেনারা আর কখনও বালিউড়া আসেনি।ক্যাপ্টেন হেলাল দায়িত্ব নেয়ার পর বালিউড়া ক্যাম্পের ডিফেন্স এগিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন।এরপর মৌওলা,উলুরগাও ও টেবলাইতে প্লাটুন ক্যাপ স্থাপ্ন করা হয়। উলুওরগাওতে বিপরী বেতুরা এবং মৌওলার বিপরীতে সিমেন্ট ফেক্টরীতে অবস্থারত পাক সেনা ওঁ রাজাকাদের সাথে প্রায়ই সংঘর্ষ বাধত।মুক্তিযোদ্ধারা প্রায়ই কাছাকাছি গিয়ে গুলি বা গ্রেনেড ছুড়ে চলে আসত। এতে পাক বাহিনী বিরক্ত হয়ে অজস্র গোলাগুলি করত। এরুপ ভাবে একদিন মৌওলায় মুসলীম নামে একজন মূক্তিযোদ্ধা শাহাদত বরণ করেন।কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে যায়নি।শাহাব উদ্দিন,সায়েমুদ্দিন প্রমুখ মুক্তিযোদ্ধা বীরত্বপূর্ণ ভাবে লড়াই করে তাদের অবস্থান ঠিক রাখেন।জেলা সাব সেক্টরের অধীনে বালিয়াউড়া কোম্পান্তে মুক্তিযোদ্ধা ছিল দেড়শর মত।ইদ্রিছ আলী কমান্ডার ছিলেন।মুছাব্বির,কোয়াটার মাস্টার ছিলেন সামাদ।প্লাটুন কমান্ডার ছিলেন এবং সহকারী ছিলেন আব্দুল হাছিব,আতাউর রহমান,সুকুমার,আছদ্দর,গিয়াস উদ্দিন,আজিজ,শাহাব উদ্দিন প্রমুখ।এ কোম্পানির সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা গাইড হিসেবে ছিলেন কদর আলী। ইনি প্রচারনার মাধ্যমে বেশ কিছু রাজাকারকে অস্ত্র সহ আত্নসমরপন করান। এ কোম্পানি ডিসেম্বররের প্রথম সাপ্তাহে ছাতক থেকে শত্রু বাহিনীকে পশ্চাদসরনে বাদ্য করে। এ সময় বেশ কয়েকটা খন্ড যুদ্ধ বিভিন্ন স্থানে হয়। বেশ কিছু ম্মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ওঁ পঙ্গু হন। এ সময় মজিদ মিয়া নামে এক মুক্তিযোদ্ধার বক্ষ বিদীর্ণ করে পিট দিয়ে গুলি বেরিয়ে যায়।সেই ভয়াবহ দিনের সাক্ষী হিসেবে ফরিদ মিয়া এখনো পঙ্গু হিসেবে বেঁচে আছেন। এই সময়ে আরোও একটি শত্রুর সাথে মোকাবেলা করতে হয় মুক্তিযোদ্ধাদের সে হচ্ছে কলেরা। কলেরায় আক্রান্ত আব্দুর রশিদ নামে মোক্তিযোদ্ধা মারা যান।
[৯৪] মো আলী ইউসুফ

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত