বালিয়াপাড়া অপারশেন, নারায়নগঞ্জ
নভেম্বর মাসের শেষের দিকে পাক আর্মি হয়।বালিয়াপাড়া গ্রামে ডুকে হাজার হাজার গ্রামবাসীকে হত্যা করে ঘরবাড়ী জ্বালিয়ে দেয়।মুক্তিযোদ্ধারা রুপগঞ্জ থানার গোলাকান্ধাইলের উত্তর দিকে জেলে পাড়ায় আগুন ধরিয়ে দেবার খবর চেয়ারম্যানের ভাই রহমানের কাছে শূনতে পান।মুক্তিযোদ্ধরা মাত্র ভাত খেতে বসেছেন।সাথে সাথে গ্রুপ কামান্ডার মুহাম্মদ আলতাফ হোসেন ভুইয়ার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা দুপুরের খাবার না খেয়েই তৈরী হয়ে গোলাকান্ধাইল মাঠের দিকে দৌড় দেন।মাঠের মাঝখানে পৌছেই তারা পাক সেনাদের সামনা সামনি পড়ে যান।পাকসেনাদের সাথে তাদের সম্মুখ যুদ্ধ সংগঠিত হয়।এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের আর একটি গ্রুপ ভারত থেকে আসার পর পথিমধ্যে বালিয়াপাড়া মাঠে পাক আর্মিদের আক্রমনের প্রতিউত্তর দেন।পাক আর্মিরা বালিয়া পাড়া মাঠের পশ্চিম দিকে দড়ি কান্দির কাছে অবস্থান নেয় এবং মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেনের গ্রুপ মাঠের পূর্বদিক থেকে আক্রমন করে।পাক আর্মিরা গোলাকান্ধাইলের বাজারের দক্ষিন পার্শ্বে কবরস্থানে আগেই এ্যামবুশ করা থাকে।আমির হোসেন তা দেখতে না পেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কবর স্থানে অবস্থান করে পাক সেনাদের প্রতিহত করার সিদ্ধান্ত নেন।কিশন্তু খালের দিকে এগুতেই তিনি পাক সেনাদের কবরে শোওয়া দেখে আর না এগিয়ে অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের পজিশন নিতে নির্দেশ দেন।শামসুল আলম,মোহন,আবু তালেব,মান্নান(পাচঁরুখী),তমিজউদ্দিন,বাচ্চু,নাগরীর সফরুদ্দী,মুসুরীর সিদ্দিক,মোঃইব্রাহীম,মোঃইয়াদ আলী সাথে সাথে পজিশন নেন।পাক আর্মিরা মুক্তিযোদ্ধাদের দেখামাত্র ফায়ার শুরু করে।দুপক্ষের গোলাগুলি শুরু হয়।ক্ষেতের আইলধরে খালের দিকে এগিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা শরীর ও মাথা কচুরি পানা দিয়ে ঢেকে নেন।সন্ধ্যা পর্যন্ত যুদ্ধ চলে।আমির হোসেনের বুকে ও হাতে বুলেটবিদ্ধ হন।পাক সেনারা পিছু হঠলে প্রচুর রক্তক্ষরনের কারনে তিনি দড়িকান্ধি গিয়ে পড়ে যান।মুহাম্মদ মোতালেব হোসেন ভুইয়ার গ্রুপের মুক্তিযোদ্ধা মিলন আহত হন। এ ছাড়া ঢাকার বেলায়েতের গ্রুপ ও খুশরুর গ্রুপ মিলিত হয়ে তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে।
রীতা ভৌমি
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত