বানিয়াদির যুদ্ধ, নরসিংদী
স্বাধীনতা যুদ্ধের সশস্ত্র সংরামের আহ্বানে নরসিংদী মহকুমার(বর্তমান নরসিংদী জেলা)শিবপুর থানায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে কঠে.১৯৭১ সালের মার্চ মাসে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চলে প্রশিক্ষন।উদ্দেশ্য একটাই পাকহানাদার বাহিনীকে দিতে হবে শোষনের দাঁত ভাঙ্গা জবাব।মুক্তিবাহিনীর প্রাক প্রশিক্ষণের সংবাদ পেয়ে হানাদার পাকিস্থানী বাহিনীর শিবপুরে টহল বৃদ্ধি করে।পাকিস্থানী হানাদার বাহিনী তাদের টহল রাস্থা হিসেবে মাছিমপুর ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে নরসিংদী থেকে শিবপুর থানায় টহল দিতে থাকে।শিবপুর-নরসিংদী সড়কের উভয় পাশে দক্ষিণ মাছিমপুর ইউনিয়নে বানিয়াদি গ্রাম অবস্থুত।বানিয়াদি আম্ব্যশের উদ্দেশ্য ছিল দুটি।
ক)শিবপুর থানার প্রশিক্ষনরত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অস্ত্র সংরহ করা।
খ)পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর মনোবলের উপর আঘাত হানা।
সময়টা ছিলো ১৯৭১ সালের মে মাসের প্রথম সাপ্তাহ এবং স্থান বানিয়াদি গ্রাম।শিবপুর-নরসিংদী একটা আধা পাকা সড়ক। যা শিবপুর থানার সাথে নরসিংদী সদরের যোগাযোগ রক্ষা করে।শিবপুর থানা থেকে ১কিমি দক্ষিনে মাছিম পুর ইউনিয়ন।এই মাছিমপুর ইউনিয়নের শিবপুর-নরসিংদী সড়কের উভট পার্শ্বে বানিয়াদি গ্রাম অবস্থিত।কমান্ডার মজনু মৃধা বৃদ্ধি করেন গোয়েন্দা তৎপরতা।চলে শত্রুর সম্ভাব্য আগমন ও গিনিবিধির উপর তীক্ষ্ণ নজর।পরদিন প্রতীক্ষার অবসান ঘটে। পাকিস্থানীদের একটা গাড়ি বহর নরসিংদী-শিবপুর আধা পাকা সড়ক দিয়ে আসতে থাকে।বানিয়াদি গ্রামের তিন রাস্থার মাথায় শিবপুর এর দামাল ছেলেরা ওঁৎ পেতে এমবুশ অবস্থানে বয়সে থাকে।কমান্ডার মজনু মৃধা,হারুন ও ওসমান সহ এই দলের লোকসংখ্যা ছিল ২৫ জন পূর্ব ও দক্ষিণ পাশে অবস্থান ছিল কামান্ডার মজনু মৃধার।হারুন ও ওয়সমানসহ একটা দল মজনু মৃধার দল থেকে ৩০০ মিটার দূরে অবস্থান গ্রহণ করে। এক সময় অপেক্ষার অবসান ঘটে। শত্রু অ্যামবুশ অবস্থানে প্রবেশের সাথে সাথে চলে প্রচন্ড আক্রমণ।শত্রু আকস্মিক আক্রমণে হতবিহব্বল হয়ে পড়ে এবং এলোপাথাড়ি গুলি বর্ষণ করতে থাকে। অনেকক্ষন ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় চলতে থাকে। শিবপুর থানার গার্লস স্কুলে ছিল পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প।যা ছিলো অ্যামবুশ স্থল থেকে ১ কিমি দূরে। কিছুক্ষরের মধ্যে সেখান থেকে শত্রু বাহিনীর শক্তি বৃসশি করার জন্য পাকিস্থানী সেনারা উপস্থিত হয়।পাকবাহিনী উভয় পাশ থেকে আক্রমণ করে। পরিস্থিতি মূল্যায়নপূর্বক মুক্তিযোদ্ধা কামান্ডার বাহিলদার মজনু মৃধা পশ্চাদসারণের আদেশ দেয়।স্বল্প সময়ের এই অ্যামবুশে মুক্তিবাহিনী,পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর গাড়ি বহর ও সৈনুদের ক্ষতি সাধ্রন করে বেং পূর্ব পরিকল্পিত নিরাপদ স্থানে চলে যায়। এই অ্যামবুশে বেশ কয়েকজন শত্রু হতাথত হয় বেং গাড়ি বহরের প্রচন্ড ক্ষতিসাধন হয়।বীর মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ উদ্দিন খন্দকার এই অ্যামবুশে শহীদ হন। এই আমবুশের ফলাফল মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষেই যায়,কারন তাঁরা আকস্মিকতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিল এবং শত্রুর গাড়ি বুরের ক্ষতিসাধনসহ বেশ কয়েকজন শত্রুবাহিনীর সদস্য হতাহত করতে সক্ষম হয়েছিল।
[৫৯৪] রিয়াজ আহমদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত