You dont have javascript enabled! Please enable it!

বাগুয়ানের যুদ্ধ-২, মেহেরপুর

জুলাইয়ের ১৭ তারিখ বাগোয়ান এবং রতনপুর ঘাটের মাখামাঝি জাতগায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের এক ঘণ্টা স্থায়ী সংঘষ হয়। সেদিনের মুক্তিযোদ্ধাদা দলের অধিনায়ক নায়েব সুবেদার মতিন পাটোয়ারীর ভাষা ঘটনাটি ছিল এরকমঃ ১৭ জুলাই তারিখ ঘটনা। আমাদের ইনফরমার ছিল বাদু মন্ডল (ছেগাপালনগর বাড়ি)সে পাকসেনাদের সাথে থাকতো এবং খবরাখবর সংগ্রহ করে আমাদের দিতো। ভাদু মণ্ডল আমাকে খবর দিলো যে, ১৭ জুলাই তারিখে তারা গরুর গাড়ি করে নাটুদা থেকে রেশন নিয়ে মানিকনগর যাবে। সঙ্গে ১৫ জনের মতো পাকসেনা থাকবে। ভাদু মণ্ডল হুঁশিয়ার করে দিলো- ‘আমার গাড়োয়ান জেন না মরে।’ আমি ১৫ জনের একটি দল নিয়ে একজন সিভিল গাইডের সহায়তায় বাগোয়ান এবং রতনপুর ঘটের নিকট ওঁৎ পেতে বসে থাকি। গাইডেও আমাদের সঙ্গে রইলো। ভোর ৬টায় যখন পাকসেনাদের দলটি রেশন নিয়ে চলছিল, ঠিক তখনই আমারা পাকসেনাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ি। এক ঘণ্টা সংঘষ চললো। গোলাগুলির শব্দে মানিকনগর এবং নাটুদা হাইস্কুলে অবস্থানরত পাকসেনারা ঘটাস্থলে দ্রুত চলে আসে এবং আমাদের দু দিক থেকে ঘিরে ফেলে। পাকসেনারা আমাদের আত্নসমর্পণ করতে বলল।আমি বললাম,ক্ষমতা থাকে তঁ এসে ধর। সামনাসামনি গালাগালি চলছে গুলি চালাচ্ছি আর হিছু হটছি। আমাদের গাইড পিছু পড়ে গেল এবং সে পাকসেনাদের হাতে ধরা পড়ল। আমারা শেষ পর্যন্ত নিরাপদে দূরে সরে আসি। ঐ দিন বিকেলে পাকসেনারা আমাদের গাইডের দুই হাত পা বেধে নাটুদা স্কুলে সুপস্থিত জনতার সামনে বেয়োনেট দিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে নিশংস ভাবে হত্যা করল। এই হত্যাযজ্ঞ নিরীহ গ্রামবাসীকে দেখতে বাধ্য করা হলো-যে মুক্তিবাহীনিকে সাহায্য করলে এমনি শাস্তি পেতে হবে এদিনের যুদ্ধে অংশগ্রহঙ্কারী মুক্তিযোদ্ধা বশুর আহমদ তাঁর স্মৃতিচারনে বলেন, কেদারগঞ্জ নাটুদা রাস্থার দক্ষিনে ১০ হাত ব্যবধানে ৩টি এল এম জি সেট করা হয়।কথা ছিল পায়ে হাটা সব কটা পাকসেনা টারগেটের মধ্যে চলে আসার পর ফায়ার ওপেন করা হবে। কিন্তু কয়েকজন পাকসেনা টারগেটের বাহিরে থাকতেই ইদ্রিস আলী এল এম জির ব্রাস ফায়ার করে দেয়। ফলে ৭জন পাকসেনা বেঁচে যায়।
[১০৩] রফিকুর রশীদ

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!