You dont have javascript enabled! Please enable it!

বয়রার যুদ্ধ-২, যশোর

যশোর জেলার বেনাপোল স্থল বন্দরের কাছে বয়রার অবস্থান। এটি বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্ত বরাবর ভারতের একটি গ্রাম। বয়রার সাথে সংযুক্ত বাংলাদেশের অন্যতম স্থান কাশিপুর, যা যশোর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। কপোতাক্ষ নদ কাশিপুর-বয়রা সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে প্রবাহিত। স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বয়রা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, রসদ এবং প্রতিরক্ষা অবস্থান হিসেবে বিবেচিত ছিল। উল্লখ্য, বেনাপোলের সন্নিকটে অবস্থিত বয়রা ৮ নং সেক্টরের আওতাধীন একটি সাব-সেক্টরের সদর দপ্তর ছিল।
১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল ৮ নং সেক্টর কমান্ডার মেজর আবু ওসমান চৌধুরী তার সদর দপ্তর বেনাপোলে স্থানান্তরিত করেন। তাছাড়া জেনারেল ওসমানী যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার জন্য বেনাপোলকে স্মন্বয় কেন্দ্র হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। মেজর মঞ্জুর বেনাপোল ও বয়রায় মুক্তিবাহিনীর প্রশিক্ষণ বয়রা হতে পরিচালনা করতেন। সীমান্তে অবস্থিত এই প্রশিক্ষনে কেন্দ্রের অবস্থানগত কারণে মুক্তিযোদ্ধারা ভারত সীমান্তে অবস্থান করে বিভিন্ন সময়ে রেইড, অ্যামবুশ এবং বিভিন্ন অপ্রচলিতে পন্থায় পাকবাহিনীর ওপর আক্রমণ পরিচালনা করত।
বয়রা অবস্থান থেকে মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা পাকসেনাদের ওপর বরাবর আঘাত করায় তারা মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর আক্রমণের পরিকল্পনা নেয়। পাকসেনারা ২৭-২৮ মে ভোর চারটার দিকে প্রথমে দুই কোম্পানি সৈন্য নিয়ে মুক্তিবাহিনীর কাশিপুর-বয়রা অবস্থানের ওপর আক্রমণ করে। উভয় পক্ষে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। পাকসেনাদের এই আক্রমণের প্রথম ধাপ মুক্তিবাহিনী প্রতিহত করায় তারা তেমন সাফল্য অর্জন করতে ব্যর্থ হয়। দুই ঘন্টা পর সকাল ৬টার দিকে পুনরায় পাকসেনাদের এক ব্যাটালিয়ন সৈন্য এই সংঘর্ষে অংশ নেয়। ব্যাপক আক্রমণের মুখে ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন তার বাহিনী নিয়ে কাশিপুর থেকে বয়রায় পশ্চাৎপসরণ করে সীমান্ত অতিক্রম করে।
[৫৭] রিয়াজ আহমেদ

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!