বর্ণী বিওপি’র যুদ্ধ, যশোর
যশোর জেলার চৌগাছা থানা সদর থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ছিল বর্ণী বিওপি’র অবস্থান। কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই বিওপি’র উত্তরে কাটগড়া বাওড় ও পূর্বে কানকুড়িয়া বাওড়। পাকবাহিনীর অবস্থান দখল ও বিস্তীর্ণ পশ্চিম সীমান্ত এলাকা শক্রমুক্ত করার লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধারা এখানে অপারেশন চালায়।
ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদা প্রায় দুই কোম্পানি মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে ১৯৭১ সালের ৫ আগস্ট বর্ণী বিওপিতে অবস্থানরত ৭৫ জন পাকসেনার ওপর আক্রমণ চালায়। মুক্তিবাহিনীর তীব্র আক্রমণের মুখে পাকসেনারা তাদের ১৫ জনের লাশ ফেলে রেখে চলে যায়। ফলে দখলকৃত বিওপি থেকে ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদা ও তার লোকজন অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিজেদের মূল ঘাঁটিতে নিতে শুরু করেন। এমনই সময়ে পাকসেনারা পেছন থেকে অগ্রসর হয়ে মুক্তিবাহিনীর ওপর প্রতিআক্রমণ করে বসে। মূলত মুক্তিবাহিনী এরূপ আক্রমণের জন্য প্রস্তুত ছিল না। যে কারণে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হঠতে বাধ্য হন। এ সময় সংঘর্ষে ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। অবশ্য ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদা মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পান এবং অন্যান্যদের নিয়ে নিরাপদ স্থানে ফিরে আসেন।
শক্রর শক্ত অবস্থানকে ধ্বংসের জন্য প্রয়োজনীয় আর্টিলারি সাপোর্ট না থাকা এবং প্রতিআক্রমণ প্রতিহত করার প্রস্তুতি না থাকার কারণে এই যুদ্ধে মুক্তিবাহিনী তার প্রাথমিক সাফল্য ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়।
[৫৭] ইকবাল জাফর খন্দকার
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত