You dont have javascript enabled! Please enable it!

বড়লেখা অপারেশন: ধামাই বাগান, সিলেট

ধামাই বাগান: জুড়িতে পাক হানাদারদের নারকীয়তা যখন সীমা ছড়িয়ে যাচ্ছিল মুক্তিযোদ্ধারা তখন হিট করার সিদ্ধান্ত নেন। জেড ফোরসের তিনটি দল যৌথভাবে এ অপারেশনে অংশগ্রহণ করে। এইট বেঙ্গলের দায়িত্ব লাভ করেন মেজর আমিনুল হক। তিনি অপারেশন ইনচারজের দায়িত্বে ছিলেন। এইচ বেঙ্গলের ডি কোম্পানি দায়িত্ব পান লে. এমদাদুল হক। তাঁর দলে সদস্য ছিলেন এক কোম্পানি যোদ্ধা। আরেক দল এম এ মুমিতের নেতৃত্বে কার্টার পার্টি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ পরিকল্পনা অনুযায়ী লে. এমদাদুল হকের নেতৃত্বে ১ কোম্পানি সেনা আক্রমণের সূচনা করে। আগস্ট মাসের ২০ তারিখে কুকিরতল থেকে রওয়ানা হলেন মুক্তিযোদ্ধারা। নির্দিষ্ট স্থানে উপস্থিত হলে অপারেশন কমান্ডার সবাইকে পুনরায় সতর্ক করে দিলেন। তারপর অপারেশনের নির্দেশে, বাংলার সূর্য সন্তানেরা পাক বাহিনীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়লেন। সমস্ত বাগান জুড়ে সৃষ্টি হলো যুদ্ধের তাণ্ডব। উভয়পক্ষের গোলা বিনিময়ে শেষ রাতের নীরবতা ভেদ করে কেঁপে উঠে বাগান ও তাঁর চারপাশ। একটানা তিন ঘন্টা চলে যুদ্ধ। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচণ্ড আক্রমণের মুখে অবশেষে সকাল সাড়ে ৭টার সময় পাক সেনারা গুলি বর্ষণ বন্ধ করে। বাঙ্কার ছেড়ে পালাতে থাকে তারা। মুক্তিযোদ্ধারা এগিয়ে এসে পাঁচটি মৃতদেহ আবিষ্কার করে হানাদারদের। এদিকে রাজাকার বাহিনীর ২০জন সদস্য পালাতে গিয়েও ব্যর্থ হয়। প্রাণ রক্ষার জন্য তারা আত্মসমর্পণ করে। অপারেশন শেষে মুক্তিযোদ্ধারা নিশ্চিন্ত মনে ফিরছিলেন। তখন আবার পাল্টা আক্রমণ চালায় পাক সেনারা। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু বরণ করেন লেঃ এমদাদ। সহযোদ্ধা মছলু মিয়া তাঁর লাশ কাঁধে নিয়ে যান কুরিকরতল ক্যাম্পে। এভাবে দেশপ্রেমের কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন লে. এমদাদুল হক।
[৯৩] মোস্তফা সেলিম

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!