বড়ৈবাড়ী ও বরাবো গ্রামের যুদ্ধ, নরসিংদী
ঢাকা-ভৈরিব রেললাইনে ঘোড়াশাল ও জিনারদি রেলস্টেশনের মধ্যবর্তী একটি গ্রামের নাম বড়ৈবাড়ী। বড়ৈবাড়ীর সাথে সংযুক্ত আরেকটি গ্রাম হল-বরাবো। বড়ৈবাড়ীর কাছে রেললাইনের উপর একটি সেতু অবস্থিত। এই রেলব্রিজের উত্তর পাশে বড়ৈবাড়ী ও বরাবো গ্রামের অবস্থান। এই বড়ৈবাড়ী ও বরাবো গ্রামে ঘোড়াশাল সেনা ক্যম্প থেকে পাকসেনারা এসে লুন্ঠন ও নির্যাতন চালাত। তাই পাকসেনাদের শায়েস্তা করতে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কাদির পাকসেনাদের ওপর একটি অ্যাম্বুশ পাতার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা কাদির মোট ৪০/৫০ জন সহযোদ্ধা নিয়ে ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহের একদিন ভোরে (সঠিক তারিখ জানা যায় নি) রেলব্রিজের পাশে অবস্থান নেয়। তারা ঘোড়াশাল থেকে আগত ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। আনুমানিক ৮টার সময় একটি ট্রেন ঘোড়াশাল হতে এসে বড়ৈবাড়ীর রেলসেতুর পূর্ব পাশে থামে। সাথে সাথেই ট্রেনটির পেছনের দুটো কমপারটমেন্টে অবস্থানরত পাকসেনাদের লক্ষ্য করে মুক্তিযোদ্ধারা গুলি ছোঁড়ে। পাকবাহিনীও পাল্টা গুলি ছোঁড়ে। দু’পক্ষের মধ্যে প্রায় দু’ঘন্টা গুলি বিনিময় হয়। একপর্যায়ে মুক্তিবাহিনীর গোলাবারুদ শেষ হয়ে গেলে তারা অ্যাম্বুশ স্থল ত্যাগ করে গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে উত্তর দিকে যেতে থাকে এবং পাকসেনারাও তাদের ধাওয়া করে বরাবো গ্রামের ভেতর চলে যায়। এ সুযোগে কিছু মুক্তিযোদ্ধা পশ্চিম দিক দিয়ে ঘুরে এসে ট্রেন থেকে পাকসেনাদের রেশন ও গোলাবারুদ লুট করে নিয়ে যায়। এ যুদ্ধে কোন পক্ষেরই কেউ হতাহত হয় নি।
[৫৯৪] তানজিলা তাওহিদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত