বক্তাবলী ইউনিয়নে পাকআর্মিদের আক্রমণ, নারায়ণগঞ্জ
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার বক্তাবলী ইউনিয়নের কানাইনগর, লক্ষীনগর গোপালনগর, রামনগর ও গঙ্গানগর ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটি। এই ইউনিয়নের গ্রামবাসীরা মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বাত্মকভাবে সাহায্য করেন। থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। পাকসেনারা রাজাকার মারফত অবগত হন বক্তাবলী ইউনিয়নে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি ঘাঁটি রয়েছে। ২৯ নভেম্বর মধ্যরাতে পাকসেনারা বক্তাবলী ইউনিয়নের উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব দিক ঘিরে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ করলে গ্রুপ কমান্ডার মাহফুজুর রহমান মাফুজ সাথে সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের পজিশন নিতে নির্দেশ দেন। প্রতিরোধ গরে তোলেন। পাকসেনারা আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র মর্টার, মেশিন গান, লাইট মেশিন গান নিয়ে রাতের অন্ধকারে নিরীহ গ্রামবাসী মুক্তিযোদ্ধাদের উপর ঝাঁপিয়ে পরে। হাজার খানেকরও বেশি পাকসেনা গ্রামের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। বরিশালের উজিরপুরের নূরুল ইসলামের গ্রুপ, শাহজাহান গ্রুপ, মুন্সিগঞ্জের বিদ্যুত-এর গ্রুপ, সিরাজুল ইসলামের গ্রুপের মুক্তিযোদ্ধা আমিনুর, আজহার হোসেন, দুলাল, হাফিজুর রহমান (ঘটনাস্থলে সিরাজুল ইসলাম অনুপস্থিত ছিলেন) ছাড়াও মতিউর রহমান, হালিম, আজাদ, আব্দুর রহমান, আব্দুল আজিজ,মো. সলিমুল্লাহসহ আরো মুক্তিযোদ্ধারা মিলিতভাবে রাইফেল, স্টেনগান, এস.আল.আর নিয়ে ছয় ঘন্টা পাকসেনাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে যান। এই অপারেশনে মুক্তিযোদ্ধাসহ নিরীহ গ্রামবাসী একশো তেইশ জন শহীদ হন। পাকসেনাদের সঙ্গে আর কুলাতে না পেরে মাহফুজুর রহমান মুক্তিযোদ্ধাদের পিছু হটতে নির্দেশ দেন। সাত জন পাক আর্মি নিহত ও ১৭/১৮ জন আহত হয়।
[১১০] রীতা ভৌমিক
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত