ফুলচোয়ার যুদ্ধ, চাঁদপুর
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ হাজীগঞ্জ থানার রাজারগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ভারতের অমপি নগর থেকে এফএফ দ্বিতীয় ব্যাচে প্রশিক্ষণ নেন। জনাব আজাদ হাজিগঞ্জ থানা এফএফ সহকারী থানা কমান্ডার ছিলেন। তিনি একজন ছাত্রনেতাও বটে। যুদ্ধের ব্যাপারে প্রশ্ন করলে জনাব আজাদ বলেন, আমি অনেক যুদ্ধেই অংশগ্রহণ করি। তার মধ্যে ফুলচোয়ার যুদ্ধ একটি স্মরনীয় ঘটনা। কমান্ডার আজাদ বলেন, “১০ ডিসেম্বর ’৭১ সকাল ৭টার সময় একদল পাকফৌজ কুমিল্লা সেনানিবাস থেকে ক্যাপটেন অনিক নেওয়াজের নেতৃত্বে সিমলা, বোরকাল হয়ে ফুলচোয়া খোলা ফসলের মাঠের মধ্যদিয়ে যাচ্ছিল। এই অবস্থায় আবুল কালাম আজাদ ১১ জন সহযোদ্ধাকে নিয়ে পাকবাহিনীকে ঘিরে ফেলে। সেই যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধারা হলেন, রুহুল আমিন মাওলানা, আবুল খায়ের মিয়াজি, শাহজাহান মাষ্টার, শহীদ উল্যা বকাউল বর্তমানে সাব জজ, শুকরুল আলম, এমদাদুল হক পাটোয়ারী, মোখলেছুর রহমান, সামছুল আলম, জয়নাল আবেদীন, জাহাঙ্গীর পাটোয়ারী প্রমুখ। সেখানে পড়ে অন্যন্য মুক্তিযোদ্ধারাও আমাদের সাথে যোগ দেয়। পাকবাহিনী ফুলচোয়া গ্রামের জনাব ফজিলউদ্দিন পন্দিত সাহেবের বাড়িতে মুক্তিবাহিনী আছে বলে এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ করে। তাদের গুলিতে আবুল হোসেন মারা যায়। এই অবস্থায় পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিবাহিনীর প্রচণ্ড লড়াই হয়। যুদ্ধে পাকবাহিনীর ৬ জন সেনা ও ক্যাপ্টেন আনিক নেওয়াজ আহত হয়। শেষ পর্যন্ত পাকবাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে সারেন্ডার না করাতে মিত্র বাহিনীকে খবর দেয়া হয়। বেলা ১০.৩০ মিনিটে ক্যাপ্টেন জহিরুল হক পাঠান ও মিত্রবাহিনী এলে ফুলচোয়ায় ৮০ জন পাকসেনা আত্মসমর্পণ করে। এই যুদ্ধে চারজন বেসামরিক লোক নিহত হয়।
[৫০] ডা. মোঃ দেলোয়ার হোসেন খান
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত