ফুলবাড়িয়ার যুদ্ধ, গাজীপুর
গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার উত্তরে টাঙ্গাইল জেলার সীমান্তে ফুলবাড়িয়া বাজার অবস্থিত। এই ফুলবাড়িয়া বাজার ও তৎসংলগ্ন এলাকায় ১৯৭১ সালে রাজাকার ও পাক-মিলিশিয়া বাহিনীর দুটি শক্তিশালী ঘাঁটি ছিল। এই দুটি ঘাঁটির একটি ছিল স্থানীয় চেয়ারম্যানের বাড়িতে ও অপরটি ছিল ফুলবাড়িয়া বাজারের দক্ষিণ প্রান্তে। মুক্তিযোদ্ধারা তাই হানাদারদের এই দুটি ঘাটিতেই একসঙ্গে আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেয়। মুক্তিবাহিনীর কোম্পানী কমান্ডার আবুল কালাম আজাদ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের দুটি দলে ভাগ করে একটি দলকে চেয়ারম্যানের বাড়িতে ও অপর দলকে ফুলবাড়িয়া বাজারের দক্ষিণ প্রান্তের ঘাঁটিতে আক্রমণ করার নির্দেশ দেয়। সিদ্ধান্ত ছিল প্রথম দলটি চেয়ারম্যানের বাড়ি আক্রমণ করে সেখানকার রাজাকারদের জীবিত পাকড়াও করবে ও অপর দলটি বাজারের দক্ষিণ দিকের ঘাঁটিটি আক্রমণ করে রাজাকার ও মিলিশিয়াদের খতম করে দেবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধারা নিজ নিজ অবস্থানে হাজির হন। কিন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের যে দলটি চেয়ারম্যানের বাড়ি আক্রমণের দায়িত্বে ছিলেন তারা ব্যর্থ হন এবং পাকসেনাদের গুলিতে মুক্তিযোদ্ধা আজিজ ঘটনাস্থলেই শহীদ হন। মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ আজিজের লাশ উদ্ধারের জন্য প্রতিকূল পরিস্থিতিতেই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকে। ইতোমধ্যে দক্ষিণ ঘাঁটির কাজ শেষ করে কমান্ডার আবুল কালাম চেয়ারম্যানের বাড়ির ঘাঁটিতে পৌছান এবং শহীদ আজিজের লাশ উদ্ধারের জন্য নতুনভাবে আক্রমণ শুরু করেন। শেষপর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ আজিজের লাশ উদ্ধারে সক্ষম হন এবং এতে মুক্তিযোদ্ধা জামানসহ দুজন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন। ফুলবাড়িয়ার যুদ্ধে ১ জন রাজাক্র নিহত ও ৮ জন আহত হয়।
[৫৯৪] তানজিলা তওহিদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত