প্রতিরোধ যুদ্ধে চিকিৎসা ব্যবস্থা
বিভিন্ন সেক্টর এলাকায় চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে দায়িত্ব প্রদান করা হয় এবং সেক্টর এলাকায় ডাক্তারের নিয়োগ করা হয়। পাশাপাশি সেক্টর হেডকোয়ার্টার ও সাব-সেক্টর এলাকায় প্রয়োজনীয় হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন করতে নির্দেশ দেয়া হয়। কেন্দ্র থেকে নির্দেশ থাকে যে প্রত্যেক সাব-সেক্টরে একটি ফিলদ মেডিক্যাল ইউনিট থাকবে, সেখানে থাকবেন ১ জন মেডিক্যাল অফিসার, ২ জন নার্সিং এসিস্ট্যান্ট এবং ৪ জন স্ট্রেচার বাহক। আবার সেক্টর হেডকোয়ার্টারে থাকবে ৩০-৪০ শয্যা একটি এডভান্সড ড্রেসিং স্টেশন। এখানে থাকবেন ১ জন সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার, ৬ জন নার্সিং এসিস্ট্যান্ট, ২ জন সুইপার, ৪ জন স্ট্রেচার বাহক, ২ জন ওয়ার্ড বয়।। এছাড়া থাকবে ২টি এম্বুলেন্স ও ১টি জিপ। এছাড়া সেক্টর হেডকোয়ার্টারে থাকবে একটি প্রধান ড্রেসিং স্টেশন, সেখানে কাজ করবেন ১ জন কমান্ডিং মেডিক্যাল অফিসার, ১ জন মেডিক্যাল স্পেশালিস্ট, ৪ জন মেডিক্যাল অফিসার, ১ জন কোয়ার্টার মাস্টার, ১৮ জন নার্সিং এসিস্ট্যান্ট, ১ জন ডিসপেনসার, ১০ জন ওয়ার্ড বয়, ১ জন অরডারলি কুক, ৩ জন চৌকিদার, ৪ জন কেটারিং এসিসিট্যান্ট, ১ জন টাইপিস্ট, ১ জন ক্লার্ক। এছাড়া থাকবে, প্যাথলজিক্যাল ও রেডিওলজিক্যাল ইউনিট এবং ৪টি এম্বুলেন্স, ২টি জিপ ও ১টি ৩ টনি ট্রাক।
কেন্দ্রের নির্দেশানুযায়ী ২নং সেক্টরে সাব-সেক্টর এলাকায় চিকিৎসাকেন্দ্র প্রতিষ্টিত হয়। সেক্টর হেডকোয়ার্টারে চিকিৎসার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গৃহীত হয় এবং কিছু কিছু ফিলদ হসপিটাল স্থাপিত হয়। আহতদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গৃহীত হয়। এছাড়া রোগীর বিশেষ আহারের ব্যবস্থা রাখা হয়। সেক্টর অধিনায়ক ১৫ দিনে অথবা মাসে একবার হলেও চিকিৎসাকেন্দ্র পরিদর্শন করতেন।
২নং সেক্টরে উল্লেখযোগ্য হাসপাতালটির নাম “বাংলাদেশ হাসপাতাল”। মে মাসে এটি আগরতলাস্থ সোনামুড়ায় স্থাপিত হয়। জুলাই মাসে নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে হাসপাতালটি সীমান্ত এলাকা থেকে অপেক্ষাকৃত দূরবর্তী এলাকা আগরতলার দারোগা বাগিচায় স্থানান্তরিত হয় এবং আগস্ট মাসে হাসপাতালটি আগরতলার সন্নিকটে শ্রী হাবুল ব্যানারজির বাগানে (বিশ্রামগঞ্জ) স্থানান্তরিত এবং প্রসারিত করা হয়। এ হাসপাতালে দুই শ’শয্যার স্থান সংকুলান করা হয়। এ সময় এ হাসপাতালে লন্দনে প্রশিক্ষণরত ডাক্তার জাফরউল্লাহ চৌধুরী, ডাক্তার মবিন ও চিকিৎসাশাস্ত্রে অধ্যায়নরত বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী যোগদান করে হাসপাতালের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম হন। তখন থেকে এ হাসপাতালটি ‘বাংলাদেশ হাসপাতাল’ নামে পরিচিত হয়ে উঠে। অন্যান্য সেক্টরের তুলনায় ২নং সেক্টরের হাসপাতাল ও চিকিৎসাব্যবস্থা ছিল অপেক্ষাকৃত বেশি ব্যাপক। এখানে বাংলাদেশ হাসপাতালে অধিকসংখ্যক ডাক্তার, সহকারী ও নার্স নিয়োজিত থাকত। এখানে তত্ত্বাবধায়ক ৪ জন, প্রশাসনিক অফিসার ১ জন, সহকারী প্রশাসনিক অফিসার ১ জন, কর্মকর্তা ৩ জন, চিকিৎসক ১৩ জন, সহকারী ২৪ জন কর্তব্যরত থাকেন।
বাংলাদেশ হাসপাতাল, আগরতলা (বিশ্রামগঞ্জ) :
প্রশাসক ও ডাক্তারদের নামের তালিকা
নাম পদবি নিযুক্তি
খালেদ মোশাররফ মেজর অধিনায়ক সেক্টর-২
আবুল হাসেম — —
নুরুল হুদা প্রকৌশলী তত্ত্বাবধায়ক
মাহাবুবুল আলম প্রকৌশলী তত্ত্বাবধায়ক
তাজুল ইসলাম প্রকৌশলী তত্ত্বাবধায়ক
শাহাবুদ্দিন ভুঁইয়া প্রকৌশলী তত্ত্বাবধায়ক
হাফিজুল আলম প্রকৌশলী প্রশাসনিক অফিসার
সাদেকুর রহমান ব্যাংক কর্মকর্তা কর্মকর্তা
শওকত আলী সুবেদার মেজর কর্মকর্তা
আব্দুল মান্নান সুবেদার কর্মকর্তা
আখতার আহমেদ ক্যাপ্টেন সংগঠক চিকিৎসক
নাজিম উদ্দিন আহমেদ চিকিৎসক সংগঠক চিকিৎসক
জাফর উল্লাহ চৌধুরী চিকিৎসক সংগঠক চিকিৎসক
এম.এ.মবিন চিকিৎসক সংগঠক চিকিৎসক
সেতারা বেগম ক্যাপ্টেন চিকিৎসক
এ.কে.এম.শামসুদ্দিন মেডিক্যাল ছাত্র চিকিৎসক
এ.কিউ.এম.মাহমুদ মেডিক্যাল ছাত্র চিকিৎসক
মোরশেদ চৌধুরী মেডিক্যাল ছাত্র সহকারী চিকিৎসক
কিরণ চন্দ্র দেবনাথ মেডিক্যাল ছাত্র সহকারী চিকিৎসক
লুৎফুর রহমান মেডিক্যাল ছাত্র সহকারী চিকিৎসক
জুবায়ের মেডিক্যাল ছাত্র সহকারী চিকিৎসক
আবুল কাশেম মেডিক্যাল ছাত্র সহকারী চিকিৎসক
ডালিয়া সালাউদ্দিন মেডিক্যাল ছাত্র সহকারী চিকিৎসক
জাকিয়া খাতুন শিক্ষিকা সহকারী (প্রশাসনিক)
খুকু আহমেদ গৃহিণী সহকারী
সাঈদা কামাল (টুলু) ছাত্রী সহকারী
সুলতানা কামাল (লুলু) ছাত্রী সহকারী
রেশমা আলম ছাত্রী সহকারী
অনুপমা দেবনাথ ছাত্রী সহকারী
মিনু বিল্লাহ ছাত্রী সহকারী
গীতা মজুমদার (চক্রবর্তী) ছাত্রী সহকারী
ইরা কর ছাত্রী সহকারী
গীতা কর ছাত্রী সহকারী
নীলামা বৈদ্য ছাত্রী সহকারী
পদ্মা রহমান ছাত্রী সহকারী
বাসনা ছাত্রী সহকারী
শেফালী ছাত্রী সহকারী
শোভা ছাত্রী সহকারী
লক্ষী ছাত্রী সহকারী
অনিলা ছাত্রী সহকারী
যুথিকা ছাত্রী সহকারী
আলো রাণী ছাত্রী সহকারী
আরতী ছাত্রী সহকারী
কল্পনারাণী দেব ছাত্রী সহকারী
শ্যামা ছাত্রী সহকারী
অঞ্জলি ছাত্রী সহকারী
মধুমিতা ছাত্রী সহকারী
[১৫৮] রিয়াজ আহমেদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত