পঞ্চগড় আক্রমণ
পঞ্চগড়ে পাকিস্তানীদের খুব মজবুত ঘাঁটি ছিল। এখানে শক্রর প্রায় তিন ব্যাটালিয়ন সৈন্য নিয়োজিত ছিল। তাঁদের পঞ্চগড়ের চতুর্দিকে পাকা বাঙ্কার ও মজবুইত ট্রেঞ্চ ছিল। ২৬ নভেম্বর রাতে মুক্তিবাহিনীর ১ ব্যাটালিয়ন ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর ২ ব্যাটালিয়ন যৌথভাবে পাকবাহিনীর পাকা ঘাঁটি পচনগড় আক্রমণ করার পরিকল্পনা করে। মুক্তিবাহিনীর নেতৃত্ব প্রদান করেন ক্যাপ্টেন সুলতান শাহরিয়ার রশিদ। তিনি ৬ নং সেক্টরের ১ নং সাব –সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। সারারাত যুদ্ধ চলে কিন্ত পাকিস্তানীরা পঞ্চগড় ডিফেন্সে থাকতে সমর্থ হয়। ২৭ তারিখ সাড়া দিনরাত যুদ্ধ চলে। সেদিন ভারতীয় বিমানবাহিনী পঞ্চগড়ে শক্রর ওপর বিমান হামলা চালায় এবং ২৮ তারিখ দিনেও আক্রমণ অব্যাহত থাকে। ২৮ তারিখ রাতে পুনরায় ভারতীয় বাহিনীর তিন ব্যাটালিয়ন ও মুক্তিযোদ্ধা ১ ব্যাটালিয়ন ও তিনশত এফএফ শক্রর ওপর আক্রমণ চালায়। সেই রাতে ভারতীয় আর্টিলারি রেজিমেন্ট ৬০টি গান থেকে একসাথে শেলিং করে। উক্ত রাতে ৬ হাজার গোলা শক্র ডিফেন্সের ওপর নিক্ষিপ্ত হয়। পাকিস্তানীরা ২৮ তারিখ রাতে পঞ্চগড় ছেড়ে ময়দান দীঘিতে ডিফেন্স নেয়। পঞ্চগড় যুদ্ধ মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর বাংলাদেশের ভেতরে বৃহৎ যুদ্ধগুলোর মধ্যে অন্যতম। পঞ্চগড় যুদ্ধে পাকিস্তানীদের দুইশত জনের মতো হতাহত হয়। ২৭ জন শক্রকে জীবন্ত ধরে ফেলা হয়। প্রচুর অস্ত্র, গোলাবারুদ ও ৮টি গাড়ি উদ্ধার করা হয়। বিভিন্ন তারিখের যুদ্ধে সম্মিলিত বাহিনীর ৩৭২ জনের মতো হতাহত হয়।
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত