পটিয়া ৬, ৭ ও ৮ নম্বর ইউনিয়নে পাক সৈন্যদের আক্রমণ প্রতিহত, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম শহরের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে পটিয়া থানার অবস্থান। চট্টগ্রামের প্রাথমিক প্রতিরোধ ভেঙে পড়ার পর ইপিআর ও সেনাবাহিনীর বাঙালি সদস্যরা পটিয়া থানার আশ্রয় নেন, ফলে পাকবাহিনীর সাথে এখানে সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে ওঠে। পাকবাহিনীর ৬ নং কুসুমপুরা, ৭ নং জিরি ও ৮ নং খাসিয়াইশ ইউনিয়নের একই দিনে আক্রমণ করার গোপন খবর মুক্তিযোদ্ধারা পেয়ে যায়। ক্যাপ্টেন করিম, কমান্ডার মাহমুদুল হক ও অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাগণ যে দিক থেকে পাকবাহিনী আসতে পারে তা চিহ্নিত করেন। তারা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে যায়। ১. শান্তির হাটের ১০০ গজ দূরে ১০ জনের ১টি দল। ২. ফকিরহাট বাজারের মসজিদের দুদিকে ২টি দল। ৩. কাজির দিঘীর পাড়ে ও ফরাসি পাড়ায় ১০ জনের ১টি দল, নেতৃত্বে থাকেন হাবিলদার নুরুন্নবী। ৪. স্কুলে ১টি রিজার্ভ পার্টি। ৫. ও অন্যান্য স্থানে অবস্থান করে। আনুমানিক ১০/১১ টার দিকে ১ম দল শান্তির হাট পৌছায়। এদিকে পাকবাহিনী সোজা জিরি গ্রামের দিকে রওনা দেয়। জিরিতে মাত্র ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা অবস্থান নেয়। আর পশ্চিম পাশে মুক্তিযোদ্ধা লোকমান একা করিও অজান্তে পজিশন নেন। তাঁর বয়স মাত্র ১৪/১৫ বছর। তিনি কমান্ডারের নির্দেশ অমান্য করে অবস্থান নিয়েছিলেন। এদিকে পাক সেনারা আসলে ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা কোনো প্রতিরোধ না করে পিছু হটে যায়। তরুণ যোদ্ধা লোকমান তা খেয়াল না করায় পাকসেনারা সহজেই ব্রাশ ফায়ার করে লোকমানকে হত্যা করে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে আরেক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালামও শহীদ হন। অন্যদিকে সৈন্যরা ফুরসিপাড়াতে এলে মুক্তিযোদ্ধা বদিউল আলম গুলিবর্ষণ করতে থাকেন। অন্য ৭ জন যোদ্ধা গুলি না করে স্থান ত্যাগ করলে বদিউল আলম পাকবাহিনীর হাতে শহীদ হন। ২ জন পাকসেনাও মারা যায়। এতে পাকসেনারা ক্ষিপ্ত হয়ে আবার প্রতিশোধ নিতে আসলে মুক্তিযোদ্ধারা এলাকা ছেড়ে চলে যান।
[৫৯৭] কে.এম.আহসান কবীর
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত