নূরউদ্দিন খান, ক্যাপ্টেন
স্থানঃ সিলেট, বালাগঞ্জ থানা।
অপরাধঃ ১৯৭১ সালের ২৬ মে বুধবার পাকিস্তানীবাহিনীর সিলেটের বালাগঞ্জ থানার নিভৃত পল্লী বুরুঙ্গায় পরিচয় পত্র প্রদানের নাম করে নিরীহ গ্রামবাসীদের বুরুঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে জড়ো করে। দুপুর ১২টার দিকে ক্যাপ্টেন নুরউদ্দিনের নেতৃত্বে পাকিস্তানীসেনারা ৭৮ জন গ্রামবাসীর দেহ মেশিনগানের গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেয়। তারপর বুরুঙ্গা বাজারের দোকান কর্মচারী জমির উদ্দিনকে পিটিয়ে তার দোকান থেকে দু’তিন কেরোসিন এনে এই হতভাগ্যদের উপর ছিটিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এ ছাড়া ১৪ জুন আদিত্যপুরের ৬৫ জন নিরীহ বাঙালিকে দড়ি দিয়ে বেঁধে তাজপুর-বালাগঞ্জ সড়কের পাশে নিয়ে হত্যা করে। এদের মধ্যে বেঁচে যান সুখময় চন্দ্র দেব ও শিবপ্রসাদ সেন চৌধুরী। ক্যাপ্টেন নূরউদ্দিন ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা এখানে ব্যাপক নারী নির্যাতন ও লুটপাট চালায়। বুরুঙ্গার বিশিষ্ট আইনজীবী রামরঞ্জন ভট্টাচার্যকে তাঁরই বারান্দায় চেয়ারে বসিয়ে এরা হত্যা করে। এ সব হত্যাকান্ডের সঙ্গে ক্যাপ্টেন নুরুউদ্দিন ছাড়াও সিলেটের দায়িত্বে নিয়োজিত অন্যান্য সকল পাকিস্তানী অফিসার ও সেনা জড়িত ছিল। সিলেটের অন্যান্য হত্যাকাণ্ড ও যুদ্ধপরাধের সঙ্গেও ক্যাপ্টেন নুরউদ্দিন জড়িত ছিল। এ ছাড়া শেরপুর ঘাঁটি থেকেও আর্মিরা বুরুঙ্গাতে আসত বলে জানা যায়। ক্যাপ্টেন নূরউদ্দিন খান ও তার সহযোগীদেরকে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করা যায়।
[১৪] ডা.এম.এ.হাসান
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত