নালমুখ বাজার অপারেশন, হবিগঞ্জ
চুনারুঘাট থানার পূর্ব দক্ষিণ সীমান্তে নালমুখ বাজারটি অবস্থিত। খোয়াই নদীর পূর্ব তীরে বেশ বড় একটি বাজার। বাজার বেশ সরগরম ছিল, দোকানীরা রাতেও বাজারে থাকত। স্থানীয় রাজাকার ও আলবদর বাহিনী নিজস্ব প্রয়োজনে বাজারটি চালু রাখার ব্যাপারে আন্তরিক ছিল। বাজারের চার কোণে রাজাকারদের চারটি শক্তিশালী বাংকার ছিল। পূর্ব উত্তর ও পূর্ব দক্ষিণ কোণের বাংকারের ২টি এলএমজি পোস্ট’ করা ছিল। ৩০ জন রাজাকার/আলবদর ২টি এলএমজি ৪টি চাইনিজ স্টেনগান, ৬টি চাইনিজ অটো রাইফেল এবং ১৮টি রাইফেল নিয়ে বাজারে অবস্থান করত। গেরিলা বাহিনী এসএমজি, এসএলআর, রাইফেল, বেয়নেট, গ্রেনেড,২টি ২ ইঞ্চি মর্টারসহ ঐ রাজাকার ক্যাম্পে সন্ধ্যা ৬টার দিকে সাঁড়াশি আক্রমণ চালায়। প্রায় ৩০ মিনিট এইসব অস্ত্রের যুদ্ধ চলছিল। রাজাকার বাহিনী আত্মরক্ষার জন্য স্থানীয় লোকজনের মতে খোয়াই নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তাঁদের ১২ জনের রাইফেলে নদীতে হারিয়ে যায়। নিরস্ত্র অবস্থায় তারা পালিয়ে যায়। চুনারুঘাট বাজারে অবস্থানরত পাকিস্তানী সেনাবাহিনী খবর পেয়ে ক্যাম্প উঠিয়ে নেয়। এই সফল আক্রমণে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আনিছুল বারী চৌধুরী। তার সহযোগী ছিলেন বামেশ রঞ্জন ভট্টাচার্য, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, এবাদুর রহমান, শ্রী সাধন শীল, শ্রী অরবিন্দ চন্দ্র, মোঃ নূর মিয়া, মোঃ মতি মাঝি, নিপেন তন্তবাই, দুলাল গুজরাট, হগু দেববর্মা।
[৬৩] মাহফুজুর রহমান
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত