নাসির আহমেদ খান শেরওয়ানী, মেজর (৩২ পাঞ্জাব, পিএ-৬১২৭)
মীর আব্দুল নাঈম, ব্রিগেডিয়ার (৩৪ ব্রিগেড, পিএ-২৭২৯)
হাফেজ আব্দুর রহমান, অবাঙালি ধর্মীয় নেতা
স্থানঃ নাটোর বনপাড়া রোমান ক্যাথলিক মিশন।
অপরাধঃ এই আর্মি অফিসাররা মুক্তিযুদ্ধের ন’মাসে শুধু নাটোরেই প্রায় ১২,০০০ নিরপরাধ বাঙালিকে হত্যা করে। নাটোর ছিল পাকবাহিনীর ২নং সামরিক সেক্টর হেড কোয়ার্টার। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন স্থান থেকে বাঙালিদের ধরে এনে নাটোরের ফুল বাগান, ভাগাড়, নদীর পাড়, গোরস্থান, এবং বিভিন্ন মাঠে হত্যা করা হয়েছে। মিশনের ছাত্রী হোস্টেলে অনেক মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। ৩ মে মেজর শেরওয়ানী তাঁর সৈন্যদের নিয়ে মিশনে ঢুকে পড়লে ফাদার নতজানু হয়ে আশ্রিতদের প্রাণ ভিক্ষা চান। কিন্ত তাতে কর্ণপাত না করে মেজর শেরওয়ানী ঝাঁপিয়ে পড়ে অসহায় নারী পুরুষ ও শিশুদের ওপর। বুলেট, লাথি, রাইফেলের বাঁট আর বেয়নেটের আঘাতে মুমূর্ষু আশ্রিতদের প্রায় সবাইকে দড়ি বেঁধে ফেলে। তারপর তাঁদের তিনটি ট্রাকে করে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। এ ছাড়াও ছাতনী গ্রামে ঘটানো হয় নৃশংসতম গণহত্যা। হাফেজ আব্দুর রহমান, মেজর শেরওয়ানী ও ব্রিগেডিয়ার নাঈম ছিল এই সব হত্যাকান্ডের মূল হোতা।
নাটোরের লালপুর থানার চিনিকল হত্যাকান্ডের সাথেও মেজর শেরওয়ানী প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল।
মেজর শেরওয়ানী ও তার সহযোগীরা চাঁপাইনবাবগঞ্জের গণপূর্ত বিভাগের বিভাগের ডাকবাংলোতে মেয়েদের ধরে এনে দিনের পর দিন নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালায়।
সাক্ষীঃ মীনা রানী প্রামাণিক ও জীতেন্দ্রনাথ প্রামাণিক।
মেজর নাসির আহম্মেদ খান শেরওয়ানী, ব্রিগেডিয়ার মীর আব্দুল নাঈম ও অবাঙালি ধর্মীয় নেতা হাফেজ আব্দুর রহমান ও তাঁদের সহযগীদেরকে গণহত্যা, যুদ্ধপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে কৃতঅপারাধের জন্য অভিযুক্ত করা যায়।
[১৪] ডা. এম.এ.হাসান
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত