নারায়ণগঞ্জ বন্দর প্রতিরোধ
বাংলাদেশের বৃহত্তম নদীবন্দর নারায়ণগঞ্জকে নিজেদের দখলে রাখার জন্য প্রথম থেকেই পাকিস্তানীরা দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ ছিল। তাই ১৯৭১ সালের ৩ এপ্রিল ভোর পাঁচটায় প্রায় ৩০০ জন পাকিস্তানী সৈন্য দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে একদল সোনাকান্দা দিয়ে এবং অন্যদল বন্দর গুদারা ঘাট দিয়ে বন্দরে প্রবেশের চেষ্টা করলে সংগ্রামী ছাত্র জনতা তাদের বাঁধা দেয়। ৪ এপ্রিল পুনরায় পাকসেনারা অবাঙালি দালালদের সহযোগিতায় বন্দরে প্রবেশের চেষ্টা করে। তখন পূর্ব থেকে প্রস্তুত থাকা মুক্তিপাগল জনসাধারণ ও মুক্তিযোদ্ধারা বন্দরে নদীর ঘাটে (গুদারা ঘাট) পাকিস্তানীদের ওপর সাধারণ অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করে। পাকিস্তানীদের ভারী অস্ত্রের আক্রমণের সামনে বেশীক্ষণ টিকতে না পেরে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। এরপর পাকসেনারা বন্দরে প্রবেশ করে এবং সামনে যাকে পেয়েছে তাকেই ধরে এনে সিরাজ-উদদৌলা মাঠে জড়ো করে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে। এরপর তারা লাশে আগুন ধরিয়ে দেয়। এভাবে প্রায় ৫০/৬০ জন নিরীহ বাঙালিকে পাকসেনারা হত্যা করে। নারায়ণগঞ্জ বন্দরের এ প্রতিরোধ ছিল বাঙালির প্রাথমিক গণপ্রতিরোধ।
[৫৯৪] তানজিলা তাওহিদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত