You dont have javascript enabled! Please enable it!

নান্দিনার যুদ্ধ, গাইবান্ধা

‘সাজা কোম্পানী ও খায়রুল আলম কোম্পানীর সহায়তায় ১৭ অক্টোবর আমিনুল ইসলাম সুজার নেতৃত্বাধীন কোম্পানী গাইবান্ধা সাদুল্লাপুর থানা আক্রমণ করে সফল হয়ে ল্যান্ডিং ঘাঁটিতে ফিরে যান। সাজা কোম্পানীর কমান্ডার সাইফুল ইসলাম সাজা ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ডে ফজলুর রহমান রাজা নান্দিনা বিলে অবস্থিত একটি বাড়ীতে কোম্পানী হেড কোয়ার্টার হিসেবে অবস্থান নেন। তাঁর নেতৃত্বাধীন প্লাটুনগুলো দুটি গ্রামে অবস্থান নেয়। সাজা কোম্পানী রতনপুর হয়ে নান্দিনা শহর আসাকালে ত্রিমোহনী রেল স্টেশনের কাছে রেল লাইনে মাইন পুতে রাখে। কোম্পানী কমান্ডার ও সেকেন্ড ইন কমান্ড এর নেতৃত্বাধীন হেড কোয়ার্টার গ্রুপ থেকে বিভক্ত হয়ে পড়ে দু’টি প্লাটুন। প্লাটুন দুটি শক্রসেনাদের আওতার মধ্যে অবস্থান নেয়। পাকবাহিনীর তীব্র আক্রমণে আত্মরক্ষায় মুক্তিযোদ্ধারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়তে থাকেন। হানাদাররাও কাছাকাছি পৌছতে থাকে। সেই সময় এলএমজি সজ্জিত সাহসী মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম হিরু ও বোয়ালীর আব্দুর রহমান (ওরফে কানা রহমান) শক্র সেনাদের প্রতি এলএমজি’র গুলি বর্ষণ শুরু করেন। দর্জি মাস্টার বীর সৈনিক আবদুল আউয়াল মুক্তিযোদ্ধাদের হানাদার বাহিনীর ঘেরাও থেকে রক্ষার পথ সৃষ্টিতে এলএমজি’র গুলি বর্ষণ করেন। কিছু সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা তাঁর ফায়ারিং এর সুযোগে একত্রিত হয়ে লক্ষীপুরে এক পাট গুদামে অবস্থান নেন। হিরু ও রহমান-এর গুলিবর্ষণের সুযোগে ক’জন ঘেরাও থেকে বেরিয়ে ফিরতে পারলেও বিমান বাহিনীর অকুতোভয় সৈনিক ভোলা জেলার ওমর ফারুক ও মোস্তফার ভাই, বোয়োলীর নবীর হোসেন, ফলিয়ার হামিদুর রহমান, লক্ষীপুরের আবেদ আলী ও গাইবান্ধা পশ্চিমপাড়ার আসাদুজ্জামান নবাব শহীদ হন। এই বীর শহীদদের হত্যা করে হানাদার সৈন্যরা অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের ধরার চেষ্টা করতে থাকে। ফলে বীর শহীদদের লাশগুলো স্থানীয় জনগণ তড়িঘড়ি করে গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়কের পাশে দাফন করে এবং শহীদ ওমর ফারুকসহ অপর তিন শহীদের লাশ দাফন করেন গাইবান্ধা সাদুল্লাপুর সড়কের পাশে।
[৫৮০] ড. মোঃ মাহবুবর রহমান

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!