You dont have javascript enabled! Please enable it!

নাভারনের যুদ্ধ, যশোর

মুক্তিবাহিনীর প্রতিরক্ষা অবস্থানের মধ্য দিয়ে চলে যাওয়া গ্র্যান্ড ট্রাংক রোড ধরে হাজার হাজার উদ্বাস্তু নর-নারী বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতের দিকে যাচ্ছিল। উদ্বাস্তুদের কাছ থেকে তথ্য পাওয়া যায় যে, পাকবাহিনীর গোলন্দাজের একটি অংশ নাভারনে ঘাঁটি গেড়েছে। তাদের অবস্থান, গতিবিধি এবং লোকবল সম্পর্কে পুরোপুরি খোঁজখবর নেয়ার পর ক্যাপ্টেন হাফিজ পাকিস্তানী আর্টিলারি গান পজিশনের ওপর রেইড করার পরিকল্পনা করে। ২১ এপ্রিল ২০ জন সৈনিক নিয়ে গঠিত রেইড পার্টিকে ব্রিফ করেন রেইড কমান্ডার ক্যাপ্টেন হাফিজ। হালকা অস্ত্র এবং একটি আরএল ও একটি মর্টার সজ্জিত রেইড পার্টিকে নিয়ে রাত ১০টার সময় কমান্ডার নিজ অবস্থান কাগজপুকুর থেকে প্রায় ৮-১০ কিলোমিটার পূর্বে নাভারনের উদ্দেশ্যে রওনা হন এবং নাভারনের সামনে বেতনা খাল পেরিয়ে পুরানবাজার পাট গুদামের কাছে শক্রর গান পজিশনের ওপর সফল রেইড পরিচালনা করেন। এতে ১০ জন পাকসেনা নিহত এবং ১৫ জন আহত হয়। মুক্তিবাহিনীর পক্ষে হাবিলদার মতিন শক্রর বুলেটে নিহত হন। এ সময় পাকবাহিনী রেইড পার্টির অবস্থান জানার জন্য ইলুমিনেটিং শেল ফায়ার করে, ফলে সম্পূর্ণ এলাকা আলোকিত হয়ে যায়। রেইড শেষ করার পর দ্রুত রেইড পার্টি নিজ প্রতিরক্ষা অবস্থান কাগজপুকুরে ফিরে আসে। রেইড পার্টিকে ধাওয়া করে পাকবাহিনী পোতাপাড়া, লাউতলা এলাকা পর্যন্ত চলে আসে এবং কয়েকজন সন্দেহভাজন বাঙালিকে হত্যা করে। পরদিন ভারতীয় সিগন্যাল কোর পাকবাহিনীর রেডিও মেসেজ ইন্টারসেপ্ট করে জানতে পারে যে, আগের দিন রাতে রেইডের ফলে একটি কামানের সাইট নষ্ট হয়ে যায় এবং কামানটি অকেজো হয়ে পড়ে।
[৫৭] রিয়াজ আহমেদ

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!