নাজিরগঞ্জ ঘাট অ্যাম্বুশ, পাবনা
পদ্মা নদীর তীরে নাজিরগঞ্জ ঘাট পাবনা জেলায় অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় পদ্মা নদী ছিল পাকিস্তানী বাহিনীর যোগাযোগের অন্যতম প্রধান পথ। তাই মুক্তিযোদ্ধারা এই ঘাট আক্রমণের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী অক্টোবর মাসের প্রথম দিকে মুক্তিযোদ্ধারা জানতে পারে পাকবাহিনী একটি কার্গোযোগে আরিচা হতে নাজিরগঞ্জ ঘাট হয়ে পাবনা এলাকায় গমন করবে। এ সংবাদের ভিত্তিতে প্রায় ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধারা একটি দল নাজিরগঞ্জ ঘাট এলাকায় নীল কুঠিতে অবস্থান গ্রহণ করে। ২৭ অক্টোবর সকার ১০টার দিকে মাঝিদের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধারা সংবাদ পায় পাকসেনাদের একটি কার্গো নাজিরগঞ্জের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ফলে মুক্তিযোদ্ধারা যার যার অবস্থানে চলে যায় এবং ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করার পর পাকসেনাদের কার্গোটি দেখতে পায় এবং তা লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। পাকসেনারাও পাল্টা গুলি করে। কিন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের অপ্রতিরোধ্য আক্রমণের মুখে প্রায় ১টার দিকে পাকসেনারা সাদা পতাকা উত্তোলন করে এবং কতিপয় মুক্তিযোদ্ধা নৌকাযোগে কার্গোটির দিকে রওয়ানা দিলে পাকসেনাদের গুলিতে নৌকাটি ডুবে যায়। তবে কোনো মুক্তিযোদ্ধা হতাহত হয়নি। অতপর মুক্তিযোদ্ধারা কার্গোটিকে ঘাটে ফেরার আদেশ দেয় এবং কার্গোটিকে ফেরার পর পাকসেনারা আত্মসমর্পণ করলেও সকল পাকসেনাদের মুক্তিযোদ্ধারা হত্যা করে। এই যুদ্ধে কোনো মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হওয়ার কোনো সংবাদ পাওয়া যায় নি।
[৫৯৭] চাঁদ সুলতানা কাওছার
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত