You dont have javascript enabled! Please enable it! নয় নম্বর সেক্টরের গেরিলা যুদ্ধ - সংগ্রামের নোটবুক

নয় নম্বর সেক্টরের গেরিলা যুদ্ধ

৯নং সেক্টরের নেতৃত্বে বিহারের চাকুলিয়া থেকে ৬ সপ্তাহের ট্রেনিং নিয়ে আসা সেক্টর হেডকোয়ার্টারে প্রেরিত শত শত মুক্তিযোদ্ধাকে প্রতিরাতে দলে দলে বিভক্ত করে বাকুন্ডিয়া বেইজ ক্যাম্প থেকে অস্ত্র গোলাবারুদ ও পাক কারেন্সি দিয়ে পাকবাহিনীর দখলকৃত ৯নং সেক্টরের আওতাধীন এলাকায় প্রেরণ আরম্ভ হলো। প্রতি রাত ১২ টার পর এটা হয়ে উঠেছিল আমাদের একতা রুটিন মাফিক কাজ যা আগেই বর্ণনা করেছি। এটাকে ‘ইনডাকশন’ নামে অভিহিত বহুল প্রচারিত হয়ে ৩/৪ মাসের মধ্যে ইন্ডাকসনের মাধ্যমে কয়েক হাজার এফএফ (ফ্রিডম ফাইটার) গেরিলা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ৯ নং সেক্টর এলাকায় বিভিন্ন সাব-সেক্টর কমান্দারদের দায়িত্বে। কয়েক মাসের মধ্যে এই উপায়ে গেরিলা যুদ্ধ পদ্ধতি সর্বমহলে প্রশংসিত হলো। পাকবাহিনীও এদের হামলায় পর্যুদস্ত হতে লাগল। ৯নং সেক্টরের মুক্তিযুদ্ধ মূলত এফএফ গেরিলা যোদ্ধাদের দিয়ে পরিচালিত হয়। এরা বাংলাদেশে প্রবেশ করে নির্দেশমতো তাদের নিজ নিজ এলাকায় প্রথমে অবস্থান নিতো। পরবর্তীতে ঐ এলাকার সাব-সেক্টর কমান্ডারের সাথে যোগাযোগ করে নির্দিষ্ট এলাকায় সমন্বিত উপায়ে অপারেশন চালাতো। এসব যোদ্ধাদের সহায়কশক্তি ছিল স্থানীয় বিভিন্ন পেশার জনগণ। তাদের সার্বিক সহযোগিতায় মুক্তিযোদ্ধারা এলাকায় অবস্থান সুসঙ্ঘত করতো। এসব এফএফরা আবার স্থানীয় যুবকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের সাথে নিয়ে অপারেশন চালাতো। এভাবে দীর্ঘ নয় মাসের যুদ্ধে ৯ নং সেক্টর এলাকার কতিপয় দালাল ব্যতীত সবাই মুক্তিযোদ্ধা পরিণত হলো তাদের কার্যাবলী দ্বারা।
[৩৬] ওবায়দুর রহমান মোস্তফা

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত