নগরকান্দা থানা আক্রমণ, ফরিদপুর
নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে ফরিদপুরের নগরকান্দা থানার পুলিশ ও রাজাকারদের চতুরপাশ থেকে ঘেরাও করে রাখা হয়। তারা বেরুতে সাহস পেত না। পাহারার মধ্যেই থাকতে হতো। এর মাঝে মুক্তিযোদ্ধারা কয়েকদফা আক্রমণ করে ওদের ভীতসন্ত্রস্ত করে তুলল। এর এক সপ্তাহ পর নগরকান্দার প্রায় সব গ্রুপ, ভাঙ্গা ও মুকসুদপুরের বেশ কিছু সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা সম্মিলিতভাবে চূড়ান্ত আক্রমণ করে। কমান্ডার আজিজ মোল্লা ছিলেন মূল নেতৃত্বে। এ যুদ্ধে হামিদ জমাদ্দার, আলতাফ হোসেন খা, মহিউদ্দিন মোল্লা, আবুল হোসেন, সূর্য মোল্লা, শহীদ বাদশা প্রমুখ গ্রুপ কমান্ডার স্ব স্ব গ্রুপ নিয়ে অংশ্রগ্রহণ করেন। এই যুদ্ধের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। চতুরপাশ দিয়ে থানা ঘিরে ফেলা হয়। জনতা চতুর্দিক থেকে জয়বাংলা ধ্বনি দিতে থাকে। দুপুরের দিকে মুক্তিযোদ্ধারা গুলি করতে করতে থানায় প্রবেশ করেন। তখন পুলিশ সদলবলে আত্মসমর্পণ করে। থানায় বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। আক্কেল আলী নিজের রিভলবারের গুলিতে আত্মহত্যা করেন। একটি এলএমজিসহ শতাধিক রাইফেল ও বহু গুলি উদ্ধার করা হয়। ঐ ঘটনার পর ভাঙ্গাস্থ পাকসেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। ভাঙ্গা ও সদরপুর থানা গুটিয়ে ফেলা হয়। এর ফলে অত্র এলাকায় মুক্তিবাহিনীর পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্টিত হয়। ঐ যুদ্ধে ভাঙ্গার সালাম গ্রুপের মুক্তিযোদ্ধা দুলাল রায় বুলেটের আঘাতে আহত হন।
[১৫] আবু সাঈদ খান
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত