You dont have javascript enabled! Please enable it!

নন্দীগ্রামের অভিযান, বগুড়া

বগুড়া থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে নন্দীগ্রাম একটি জনবহুল থানা হওয়ায় পাকবাহিনী এর নিয়ন্ত্রণ লাভের জন্য আনুমানিক এক প্লাটুন সৈন্য মোতায়েন করে। রাজাকার ও আলবদরদের সহায়তায় হানাদার বাহিনী উক্ত এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। তাদের উৎপীড়ন ও অত্যাচারে বহু নিরীহ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ডিসেম্বর মাসে মুক্তিবাহিনী দুর্বল মনোবলের পাকবাহিনীর ওপর আক্রমণ করে তাদের এলাকা ত্যাগে বাধ্য করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। থানা সদরে অবস্থিত পাকবাহিনীর এই ক্যাম্পটি আক্রমণের পরিকল্পনা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী আবু বক্কর সিদ্দিক। যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে ডিসেম্বর মাসের ১২-১৩ তারিখ রাতে মুক্তিযোদ্ধারা রাতভর যুদ্ধ করে এই প্লাটুনটিকে গ্রামছাড়া করতে সমর্থ হয়। ওই দিন রাতে হাজী আবু বক্কর সিদ্দিকের নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি মুক্তিযোদ্ধা দল এবং কিছু উদ্যোগী যুবক তাদের অস্থায়ী ক্যাম্পে আবাদপুকুর থেকে রাতের অন্ধকারে নামুইট এবং মাজগ্রাম কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে অবস্থান গ্রহণ করে। পরবর্তীতে তারা পরিকল্পনানুযায়ী লক্ষ্যবস্তু, ক্যাম্পটির উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অবস্থান গ্রহণ করে। আনুমানিক ১.৩০ মিনিটে মুক্তিবাহিনীর অকুতোভয় যোদ্ধারা ক্যাম্পের ওপর প্রচণ্ড গুলিবর্ষণ শুরু করে। মুক্তিযোদ্ধারা ৩০৩ রাইফেল, ২ ইঞ্চি মর্টার ও হ্যান্ড গ্রেনেডের সাহায্যে আক্রমণ পরিচালনা করে। অল্প জনবল ও অপর্যাপ্ত গোলা নিয়েও তারা ভোর পর্যন্ত গুলিবর্ষণ অব্যাহত রাখে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচণ্ড গোলাবর্ষণের মুখে টিকতে না পেরে পাকবাহিনী ক্যাম্প পরিত্যাগপূর্বক বগুড়ার দিকে পালিয়ে যায়। এই বীরত্বপূর্ণ অভিযানে মুক্তিযোদ্ধাদের হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। মুক্তিসেনারা একজন পাকসেনাকে বন্দি করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উক্ত পাকসেনাকে মিত্রবাহিনীর হাতে হস্তান্তর করা হয়।

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!