You dont have javascript enabled! Please enable it!

নবম সেক্টরে অপারেশনের ক্যাম্প স্থাপন ও সম্মুখযুদ্ধ, খুলনা

হিংগলগঞ্জ বিএসএফ ক্যাম্পের কাছেই একটা পরিত্যাক্ত স্বয়ংক্রিয় চালকলের চত্বরে শক্তিশালী অপারেশন ক্যাম্পটি স্থাপন করা হয়। ২/৩শ’র মতো সাহসী বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য, ইউওটিসিও ট্রেনিংপ্রাপ্ত যুবকদের নিয়ে এটা সংগঠিত করা হয়। তাদের রেশন, অস্ত্রশস্ত্র ও প্রয়োজনীয় দব্যাদি ৯ নং সেক্টর হেডকোয়ার্টার থেকে রূপান্তরিত গানবোটে অথবা সড়কপথে টেম্পো দিয়ে রাতের বেলা পৌঁছান হত। ক্যাপ্টেন (অব) নূরুল হুদা ঐ ক্যাম্পের কমান্ডার ও তিনি ৯ নং সেক্টরের সহকারী সেক্টর কমান্ডার হিসেবে যুদ্ধ করেছেন। প্রতিরাতে ক্যাপ্টেন হুদা নিজে অথবা নৌকমান্ডো ফ্রগম্যান কমান্ডো ক্যাপ্টেন মাহফুজ আলম বেগ নদী পাড়ি দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বেশ ক’টি অপারেশন চালিয়েছেন, যা পাকসেনাদের বর্ডার এলাকার প্রতিরোধ ভেঙে দেয় এবং মানসিকভাবে তারা দুর্বল হয়ে পড়ে। তার মধ্যে সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানা স্মমুখ যুদ্ধে দখল কিন্ত পরে পাকবাহিনীর জোরালো প্রতি আক্রমণে বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার শহীদের বিনিময়ে দখল ছেড়ে দিতে হয়েছিল। আর্মি হেডকোয়ার্টার এবং বাংলাদেশের ভূখণ্ডের পাকবাহিনীর শক্ত বিওপি উকসা দখল এবং পরবর্তীতে দেবহাটা থানা খাইঞ্জাপুর বিওপি পাকবাহিনীর ঘাঁটি ধ্বংস ও দখলমুক্তসহ পারুলিয়া ব্রিজ ক্যাপ্টেন বেগের ফ্রগম্যান অপারেশনের মাধ্যমে উড়িয়ে দিয়ে লাগাতার যুদ্ধের পরে ব্রিজটি দখল এবং সাতক্ষীরা দখলের পূর্বে কুলিয়া ব্রিজের যুদ্ধ উল্লেখযোগ্য।
দেবহাট ক্যাম্পঃ দেবহাট হাই স্কুলের শিক্ষক শাহজাহান মাস্টার এলাকার ছেলেদের দিয়ে দেবহাট এলাকায় এক অসম সাহসী মুজাহিদ বাহিনী গড়ে তোলেন। ৯নং সেক্টরের বেশ কয়েকটি সম্মুখ যুদ্ধে ক্যাপ্টেন শাহজাহান মাস্টারের বাহিনী দুর্জয় সাহসের সাথে বেশ ক’টি যুদ্ধ করেছেন।
হরিনগর, সুন্দরবন ক্যাম্পঃ সুন্দরবন সংলগ্ন হরিনগরে ক্যাপ্টেন বেগের নেতৃত্বে লেঃ মইনুল (মেজর মইন) এবং বেঙ্গল রেজিমেন্টের নায়েক বাশার সহ একটি দুর্ধর্ষ গেরিলা বাহিনী গড়ে উঠে। তাঁরা গানবোট বিধ্বংসী কামান নিয়ে বাংলাদেশের সুন্দরবন অঞ্চলে শক্তিশালী অপারেশন ক্যাম্প স্থাপন করেন। এখান থেকে পাকবাহিনীর কটি গান বোটের উপর হামলা চালিয়ে সেগুলোকে বিধ্বস্ত করেন।
কৈখালী, সুন্দরবন ক্যাম্পঃ লেফটেন্যান্ট সলিমুল্লাহর নেতৃত্বে কৈখালীতে সুন্দরবন সংলগ্ন ভারতীয় সীমান্তের সর্বশেষ স্থানে একটা অপারেশন ক্যাম্প স্থাপন করা হলে ঐ ওদিকে গানবোট আসা বন্ধ করে দেয়। সুন্দরবনের ভিতর কুখ্যাত ডাকাত পচাব্দী ফকির তার বাহিনী ও অস্ত্রশস্ত্র লে. সলিমুল্লার নিকট আত্মসমর্পণ করে এবং পরে তারা সলিমুল্লার নেতৃত্বে কৈখালী অপারেশন ক্যাম্পের বাহিনী হিসাবে যুক্ত হয়ে বাহিনীর গানবোটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বেশ সফলতা লাভ করে।
[৩৬] ওবায়দুর রহমান মোস্তফা

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!