You dont have javascript enabled! Please enable it!

ধরমপাশা যুদ্ধ, সুনামগঞ্জ

১৯৭১ সালের ২ ডিসেম্বর। কাজী আলম গ্রুপ এদিন আবার এলেন সুনামগঞ্জ ধরমপাশাকে হানাদার মুক্ত করার উদ্দেশ্যে। এবার তারা সেলবরস ধরমপাশা রাস্তা ধরে এলেন। সকালবেলা আক্রমণ শুরু হয়। তুমুল যুদ্ধের ফলে চতুর্দিক থেকে গুলির বৃষ্টি ঝরছিল। অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল জীবনে ঝুঁকি নিয়ে বাজার সংলগ্ন পুলের নিকট পাক-বাহিনীর বাংকারে গ্রেনেড চার্জ করেন। সঙ্গে সঙ্গে পাক-সেনারা মাল গুদামের উপরে বাংকার থেকে হালকা মেশিন গান দিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে মোফাজ্জলের বুক ঝাঁঝরা করে দেয়। শহীদদের খাতায় আরো একটি নাম যুক্ত হলো। মোফাজ্জল ঐ বাংকারের কাছে “জয় বাংলা” বলে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
৩ ডিসেম্বর পুনরায় ক্যাপ্টেন হামিদের নেতৃত্বে দিবালোক খয়েরদিয়ার চরের মাদ্রাসা থেকে আক্রমণ রচনা করা হয়। এ দলের ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা আঃ হাই ও মোফাজ্জলের রক্তের বদলা নিতে জীবন পণ করে এগিয়ে আসেন। এ দলের প্রায় সবাই স্থানীয় ধরমপাশার আলি গলি সম্পর্কে অবহিত ছিলেন। এক পর্যায়ে শুরু হলো সম্মুখ যুদ্ধ। প্রচন্ড আক্রমণের মুখে ক্যাপ্টেন হামিদ ৫ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ অতর্কিতে ধরমপাশায় প্রবেশ করেন। এ দুঃসাহসিক অভিযানে ক্যাপ্টেন হামিদের সাথী ছিলেন (১) মোঃ আলী জুলফিকার (শাহজাহান) (২) জুনাব আলী (৩) মথু সিংহ (৪) আবু বক্কর (৫) আব্দুল হক।
গুলি ছুঁড়তে তাদের ধরমপাশার দিকে এগুতে দেখে পাক সেনারা অবস্থা বেগতিক মনে করে নদী পথে পলায়ন করে। সংগে দালাল রাজাকারদের নিয়ে যেতেও বাধ্য হয়। প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরনে প্রকাশঃ পাকিস্তানীবাহিনী পালিয়ে যাবার সময় ৩ জন পাক সৌন্যের লাশ নিয়ে যায় এবং ১ জন রাজাকারের লাশ বাংকারে রেখে যায়। এ যুদ্ধেই ধরমপাশা শক্রমুক্ত হয়। মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে।
[৭৬] মোঃ আলী ইউনুছ

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!