You dont have javascript enabled! Please enable it!

দৌলতকান্দি প্রতিরক্ষা অভিযান, কুমিল্লা

ভৈরববাজার থেকে ৫ কি. মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল সড়কের উভয়পার্শ্বে অবস্থিত দোউলকান্দি গ্রাম। এই প্রতিরক্ষা অভিযান ১৯৭১ সালের ১১-১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংঘটিত হয়েছিল। একটি কাঁচা উঁচু সড়কে এই গ্রামের অগ্রভাগ দিয়ে উত্তর-দক্ষিণে চলে গেছে যা ধাকা-চট্টগ্রাম রেলওয়ে লাইনের সাথে সমকোণে অবস্থিত। ১১ ডিসেম্বর (মতান্তরে এর পূর্বে) ভারতীয় সেনাদল ও মুক্তিযোদ্ধারা দৌলতকান্দি স্কুল মাঠ, তুলাতলি গ্রাম, শুক্কুইরা বাজার ও গাটিয়া মাঠ এলাকা জুড়ে উত্তর পূর্ব দিকে মুখ করে প্রতিরক্ষা অবস্থান নেয়। এতে করে ভৈরব বাজারে অবিস্থানরত পাকসেনারা পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদী পার হয়ে রামনগর গ্রামে অবস্থিত বাকি সেনাদলের সাথে মিলে রামনগর ও রামনগরের দক্ষিণ পশ্চিম কোণা থেকে দৌলতকান্দি প্রতিরক্ষা অবস্থানের উপর উপর্যুপরি আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণ ও গুলি বিনিময় সকাল দশটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত চলে। এমতাবস্থায় ভারতীয় বিমান বাহিনী পাকসেনাদের উপর প্রচণ্ড বোমাবর্ষণ করে ও পরবর্তীতে আর্টিলারি গোলাবর্ষণ করে। ফলে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির স্বীকার হয় এবং পুনরায় রামনগর গ্রামে চলে যায়। এই অপারেশনে পাকিস্তানীদের কমপক্ষে ৩০ জন সৈন্য নিহত হয়। ভুল রাস্তায় পালানোর সময় ২ জন পাকিস্তানী জনগণের হাতে ধরা পড়ে এবং জনগণ তাদেরকে পিটিয়ে হত্যা করে। এই যুদ্ধে ভারতেরও প্রায় ১৫ জন সৈন্য নিহত হয় এবং মুক্তিযোদ্ধা হানিফ, মমতাজ ও হারুনসহ প্রায় ২০/২১ জন মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎবরণ করেন। এই যুদ্ধের শেষের দিকে একটি অচলাবস্থার সৃষ্টি হয় যেখানে মিত্রবাহিনী দৌলতকান্দি ও পাকিস্তানী সেনাবাহিনী রামনগড়েও পরস্পরের মুখোমুখি প্রতিরক্ষা অবস্থানে থাকে। উক্ত অবস্থা চলাকালীন ১৬ ডিসেম্বরে রামনগর প্রতিরক্ষায় অবস্থানকারী হানাদার বাহিনী মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে।
দৌলতকান্দি প্রতিরক্ষা যুদ্ধের পর প্রায় ৩০০/৪০০ পাকিস্তানী সৈন্য রামনগর গ্রামে আত্মসমর্পণ করে। এই যুদ্ধের ফলে মুক্তিযোদ্ধারা ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাথে সম্মিলিতভাবে (প্রচলিত) প্রতিরক্ষা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। [সংক্ষিপ্তায়ন]
[৫৯৪] রিয়াজ আহমেদ

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!