You dont have javascript enabled! Please enable it!

দেউলীর যুদ্ধ, ভোলা

ভোলা মহকুমার [বর্তমান জেলা] মুক্তিযুদ্ধ একটি করুন ঘটনা দিয়ে শুরু। বরিশাল দখলের পর ভোলা ট্রেজারি নিয়ে দ্বিমত হয়। ২৮শে এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে গোলাগুলি হয়। ফলে ঘটনাস্থলে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মকসুদুর রহমান, আলী আশরাফ ও ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা নিহত হয়। ২রা মে পাকিস্তানী বাহিনী ভোলা দখল করে। ক্যাপ্টেন কায়ানী ও সুবেদার নওয়াব হোসেন সমস্ত ভোলা মহকুমায় সন্ত্রাসের রাজত্ব প্রতিষ্টা করে। তাঁদের সাথে ছিল ভোলার শান্তি কমিটি ও রাজাকারদের তৎপরতা। সুবেদার সিদ্দিকুর রহমান, আনছার কমান্ডার, আকবর উদ্দীন, আগরতলা মামলায় অভিযুক্ত আবদুল আজিজ, কাজী আফতাব উদ্দীন প্রমুখ ভোলা মহকুমার মুক্তিবাহিনী গঠন করেন। লালমোহনের কাজী আফতাব উদ্দীন একদল গেরিলা নিয়ে সুন্দরবন হয়ে ভোলায় পৌঁছেন । তারপর দেউলীর সিদ্দিকুর রহমান মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে এলেন। ভোলা মহকুমায় মুক্তিবাহিনীর ৪৮টি ক্যাম্প ছিল। মুক্তিবাহিনীর সার্বিক পরিচালনায় ছিলেন দেউলী নিবাসী সিদ্দিকুর রহমান। তিনি ১৯৬৪ সনে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ইতিপূর্বে খুলনা রেডিও অফিস ও সীমান্তে যুদ্ধ করে কৃতিত্বের পরিচয় দেন। ২২ শে অক্টোবর পাকিস্তানীবাহিনী তেতুলিয়া ও বেতুয়া খাল দিয়ে দেউলী গ্রামে ঢুকে ৮০ খানা বাড়ি পুড়িয়ে ফেলে। সিদ্দিকুর রহমান সহযোদ্ধাদের নিয়ে দেউলী দিঘির পাড়ে পাকিস্তানীসেনাদের আক্রমণ করে। দেউলীর যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা অদ্ভুত সাহস ও কৌশল দেখিয়েছেন। এখানে হাতাহাতি যুদ্ধ হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা হযরত আলী পাক হানাদারদের তাক করা রাইফেলের ব্যারেল ঘুরিয়ে তাদের উপর গুলি বর্ষণ করে। সারাদিন ধরে যুদ্ধ চলে এবং ৬৪ জন খান সেনা খতম হয়। বাকি কয়েকজন কোনোরকমে ভোলায় পালিয়ে যায়। ২৯ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধারা পুনরায় বোরহান উদ্দীন থানা আক্রমণ করলে উভয় পক্ষে হতাহত হয়। পড়ে পাক-সেনারা গ্রামের অনেককে হত্যা করে।
[৫৭] সিরাজ উদ্দীন আহমেদ

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!