You dont have javascript enabled! Please enable it!

দেওলা খেয়াঘাটের অ্যামবুশ, টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতি থানাধীন হরিপুর ও কস্তুরীপাড়ার মাঝে দেওলা খেয়াঘাট। কমান্ডার লোকমান হোসেন ১৬ জন অসীম সাহসী মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে এই ঘাটে অবস্থান গ্রহণ করে। তারা প্রথমে কস্তুরীপাড়ায় অবস্থান নেয়। কিন্ত বীরবাসুন্ড আক্রমণের কথা চিন্তা করে এত কাছাকাছি আবার আক্রমণের খুব একতা ফল হবে না ভেবে দলবল নিয়ে কিছু পশ্চিমে সরে দেওলা খেয়াঘাট এলাকায় ১৯ জুলাই শক্র হননের জন্য পজিশন নিয়ে প্রায় একঘন্টা অপেক্ষা করে। ঐ দিকে শক্ররা তাঁদের উপর আর কোনো আক্রমণ না হওয়ায় তাড়াতাড়ি সরে পড়ার লক্ষ্যে মাঝারি সাইজের একটি নৌকায় ২০/২৫ জন করে দেওলা খেয়া পার হচ্ছিল। ৪০/৪৫ জন পার হওয়ার পর আহত নিহতদের পার করা শুরু করে। এদিকে ৭০/৮০ মিটার দূরে বসে শক্ররা খান পার হওয়া দৃশ্য দেখতে থাকে। তখনও প্রায় ৮০ জন শক্র খেয়াঘাটের পূর্বাপারে রয়েছে। খেয়ানৌকা আর একবার এপার থেকে ওপারে যায়। এদিকে মুক্তিযোদ্ধারা একটি বাঁধের আড়ালে পজিশন নিয়ে অপেক্ষায় থাকে। খেয়াপাড় হতে আর মাত্র ৫০/৬০ বাকি। ২০/২৫ জনকে নিয়ে খেয়ানৌকা খালের মাঝামাঝি এসে গেছে। এমন সময় খেয়ানৌকা ও পূর্ব পাড়ের শক্রর উপর মুক্তিবাহিনী আবার আঘাত হানে। কমান্ডার লোকমানের এলএমজি কড়কড় শব্দে গর্জে ওঠে। অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্রগুলো অগ্নি ঝরাতে শুরু করে দেয়। খেয়ানৌকার শক্ররা পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়লেও প্রাণে রক্ষা পায়নি। কারণ তারা সাঁতার জানত না। মাত্র দশ মিনিটের তুমুল গুলিবর্ষণে শক্রর ক্ষতির পরিমাণ হয় সবচেয়ে বেশি। দিশেহারা শক্র ১০/১২ টি সর্বাধুনিক অস্ত্র ফেলে চলে যায়। এই অ্যামবুশ ২৫ জন পাকিস্তানি নিহত হয়। ১০১২ টি অস্ত্র ও অনেক গোলাবারুদ উদ্ধার হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
[৫৯৫] ফিরোজ খায়রুদ্দিন

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!