You dont have javascript enabled! Please enable it!

দশ নম্বর সেক্টরে নৌ কমান্ডো

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের অকুতোভয় নৌ-কমান্ডোরা শত বাঁধা ও প্রতিকূলতাকে তুচ্ছ জ্ঞান করে তাঁদের দায়িত্ব পালন করে দৃষ্টান্ত হয়ে আছেন। তাঁরা খুলনার পশুর ও মংলায় বহুবার অপারেশন চালিয়েছেন। যদিও এসব এলাকার নদীগুলোতে হাঙরে পরিপূর্ণ থাকায় নৌ-কমান্ডোদের পক্ষে পাকবাহিনীর জাহাজে লিমপোট মাইন বসানো ছিল কঠিন ব্যাপার, তবু তাঁরা পিছ পএ হননি-সাহসী ও কৌশলী তৎপরতার মাধ্যমে অপারেশনগুলি সাফল্যজনকভাবে শেষ করেছেন। ঝড়-বৃষ্টি ও শীতের ঠাণ্ডাকে উপেক্ষা করে তাঁরা তাঁদের কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছিলেন। সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসভূমিসহ বহু অসুবিধার মধ্যেও তাঁরা দমে যান নি। এ সব অপারেশনে জহুরুল হক, আব্দুল খালেক ও শমসের আলী মারাত্মকভাবে আহত হন; আহত হন আরও অনেক নৌ-কমান্ডো। তাঁদের অপারেশনের ফলে শক্রপক্ষের সমুদ্রগামী ৭৬-টি জাহাজ আংশিক ক্ষতিসাধনসহ ডুবে যায়। ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে তাঁরা সাধারণত অপারেশন চালাতেন। কখনও কখনও দিনের বেলায় মাঝি সেজেও তাঁরা জাহাজে লিমপোট মাইন লাগাতেন।
নৌ-কমান্ডো গঠনের পর থেকে খুলনায় সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চল ও অভ্যন্তরীণ নৌপথে নৌ-কমান্ডোরা তাঁদের সাঁড়াশি আক্রমণ অব্যাহত রাখেন। তাঁদের আক্রমণগুলোর মধ্যে : ১৯৭১ সালের নভেম্বরের ১০ তারিখ রাত সাড়ে ১২-টায় গোয়ালন্দ ঘাটে তেলবাহী ট্যাংক, ৮ অক্টোবরে মংলা বন্দরে ষষ্ট জাহাজে ডুবানো, ২০ অক্টোবর রাত ২-টায় সুন্দরবনের অভ্যন্তরে পাকবাহিনীর জাহাজ নালশীরা ধ্বংস, ফরিদপুরের বাহুডা ব্রিজ ধ্বংস এবং পদ্মা ও পলাশের দুঃসাহসিক অভিযান ছিল অন্যতম।
[৫৭] ইকবাল জাফর খন্দকার

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!