You dont have javascript enabled! Please enable it!

তাজাম্মল হোসেন মালিক, ব্রিগেডিয়ার (২০৫ ব্রিগেড, পিএ-২১৩০)
২০৫ ব্রিগেড কমান্ডার
মীর আব্দুল নাইম (৩৪ ব্রিগেড, পিএ-২৭২৯)
৩৪ ব্রিগেড কমান্ডার
এস পি কোরেশী, মেজর (পি-এ-৭২৯৯)
তাজ, কর্নেল
শাফকাত, লে. কর্নেল (বালুচ)
ইলিয়াস, ক্যাপ্টেন
২৫ পাঞ্জাব

রাজশাহী।
অপরাধ : ১৪ এপ্রিল পাকিস্তান বাহিনী শহর নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। রাজশাহীতে প্রবেশ করে সড়কের দু’ধারের সমস্ত ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয় ও শত শত লোককে হত্যা করে। রাজশাহীর গগনবাড়িয়া গ্রামে পাচশ’ লোককে এবং জগিস্বর গ্রামে ২৭ জনকে হত্যা করে। জগিস্বর গ্রামের ৫৫ জন মহিলা এই অফিসারদের দ্বারা নির্যাতিত হন। তারা কাটাখালি, মাসকাটা দীঘি, চৌদ্দপাই, শ্যমপুর, ডাশমারী, তালাইমারী, রানীনগর এবং কাজলার বাড়ঘর জ্বালিয়ে ধ্বংস করে এবং নির্যাতন চালায়। রাজিশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকের ওপর নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে। ২৫ পাঞ্জাব ব্রিগেডের ব্রিগেড প্রধান এবং এই ব্রিগেডের অন্তর্গত অন্যান্য পাক অফিসাররা রাজশাহী বিভাগে বিভিন্ন অঞ্চলে সংঘটিত গণহত্যা, ধর্ষণ, লুট, গুম ও ধ্বংস্পযজ্ঞের মূল আসামী।
২০৫ ব্রিগেড কমান্দার তাজাম্মাল বগুড়া, জয়পুরহাট, গোবিন্দগঞ্জ, ঘোড়াঘাট, হিলি, চিলমারী, রংপুর ও ফুলছড়ি প্রভৃতি অঞ্চলের হত্যাকান্ডের নায়ক।
১৫ এপ্রিল রাজশাহী বিশ্ববিফ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক হাবিবুর রহমানকে একদল পাকিস্তানি সেনা ধরে নিয়ে যায় ব্রিগেডিয়ার আসলাম ও কর্নেল তাজের অতিথি ভবনের ছদে। এরপর তাঁকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এখনকার সকল গণহত্যা, গুম, নির্যাতন ও ধর্ষণের মূল নায়ক তারা। ২৫ পাঞ্জাব রেজিমেন্ট এখানকার দায়িত্বে ছিল।
ব্রিগেডিয়ার আসলাম ঢাকার রমনা হত্যাকান্ডের সাথেও জড়িত ছিল।
পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ক্যাপ্টেন ইলিয়াসের নেতৃত্বে ১৯৭১ সনের সেপ্টেম্বর মাসে মতিহার থানার সেনপুর গ্রামে হত্যাকান্ড চালায়। ইসলাম আলী জানান, পাকি আর্মিরা তাঁদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাঁর বাবাসহ তাঁকে ও অন্য তিনজনকে চোখ বেঁধে গাড়িতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা হলে নিয়ে যায়। জোহা হলের প্রতিটি কক্ষে ১০ জন করে বন্দি রাখা হতো। প্রতি সন্ধায় সেখান থেকে কয়েকজনকে ধরে নিয়ে যাওয়া হতো যাদের আর কোন খোঁজ পাওয়া যেত না। রাতের অন্ধকার ভেদ করে তাঁদের কানে ভেসে আসত মেয়েদের আর্তনাদ। প্রায় ৮/১০ দিন পর বন্দি শিবির থেকে তাঁর বাবা ইদ্রিস আলীকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর তাঁর কোন খোঁজ পাওয়া যায় নি। স্বাধীনতার পর ইসলাম আলীকে জোহা হল থেকে পঙ্গু অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
ব্রিগেডিয়ার তাজাম্মাল, ব্রিগেডিয়ার নাঈম ও মেজর এস পি কোরেশী ব্রিগেডিয়ার মোহাম্মদ আসলাম, কর্নেল তাজ ও লে. কর্নেল শাফকাত এবং ক্যাপ্টেন ইলিয়াসকে জোহা হলে হত্যাকান্ড, হামলা, বন্দি, গুম নির্যাতন ইত্যাদি যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য ধারায় অভিযুক্ত করা যায়।
[১৪] ডা.এম. এ. হাসান

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!