তারাইল বাজার এলাকায় এম্বুশ, কিশোরগঞ্জ
ময়মনসিংহ জেলার সাবেক কিশোরগঞ্জ মহকুমা বর্তমানে কিশোরগঞ্জ জেলার তারাইল থানার অন্তর্গত তারাইল বাজার। এই বাজার এলাকায় পাক মিলিশিয়া এবং রাজাকারদের নিয়মিত যাতায়াত ছিল। মুক্তিবাহিনী পাকবাহিনীর এই সহযোগীদের চলাচলের সংবাদে এই দলের উপর আক্রমণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
৪ আগস্ট সুবেদার জিয়াউল হকের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের ৫০ জনের একটি দল নৌকাযোগে সাবেক নেত্রকোনা মহকুমা বর্তমানে নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানার অন্তর্গত পাইকুরা ইউনিয়নের বল্লা গ্রামে অবস্থান নেয়।
এই গ্রামে গোপন অবস্থানের সুযোগে মিলিশিয়া এবং রাজাকারদের চলাচলের সময় এবং ধরণ নিরূপণের চেষ্টা চালায়। বিভিন্ন ধরনের সংবাদ সংগ্রহ এবং আক্রমণ চূড়ান্ত করার জন্য নদীর তীরেই মুক্তিযোদ্ধাদের ৪ দিন অপেক্ষার প্রয়োজন পড়ে।
৯ আগস্ট সকাল ৮ টায় লোক মারফত খবর আসে যে, রাজাকার ও মিলিশিয়া পুলিশ নির্দিষ্ট এই পথে আসছে। খবর পাওয়ার পর গ্রুপ কমান্দারের নির্দেশে রাজাকার ও মিলিশিয়া পুলিশের আগমন পথে ১৫/১৬ জনের একটি দল জঙ্গলে পজিশন গ্রহণ করে। আরো একটি দল মিলিশিয়া বাহিনীর পালিয়ে যাবার পথ বন্ধ করার লক্ষ্যে একটু দূরে অবস্থান করে। রাজাকার ও মিলিশিয়া বাহিনীর সদস্যগণ আক্রমণকারী দলের ৩/৪ শত গজের মধ্যে আসার সাথে সাথে মুক্তিযোদ্ধারা প্রচণ্ড বেগে আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণে ঘটনাস্থলে ৭ জন রাজাকার ও ৫ জন মিলিশিয়া পুলিশ নিহত হয়।
এই যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধারা হলেন-সুবেদার জিয়াউল হক। আবদুল মান্নান, রিয়াজ উদ্দিন, আলতাফ হোসেন, তোফাজ্জল হোসেন চুন্নু, আবদুল হাকিম, এবাদুল হক, মিরাশ উদ্দিন, আবুল হাসিম, লিয়াকত আলী, আবদুস সাত্তার, আব্দুর রহিম, আবদুল জব্বার প্রমুখ।
[৫৯৫] ফিরোজ খায়রুদ্দিন
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ সপ্তম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত