You dont have javascript enabled! Please enable it! জাহানজেব আবরার একাত্তরের ২৫ মার্চ ‘অপারেশন সার্চলাইট’ এর পরিকল্পনাকারী ও পরিচালনারকীদের একজন - সংগ্রামের নোটবুক

জাহানজেব আবরার, ব্রিগেডিয়ার (১৩ ফ্রন্টিয়ার ফোর্স)
পদঃ ৫৭ ব্রিগেড কমান্ডার
ঢাকা, জয়দেবপুর।

তিনি একাত্তরের ২৫ মার্চ ‘অপারেশন সার্চলাইট’ এর পরিকল্পনাকারী ও পরিচালনারকীদের একজন।
জেনারেল আবরার ঢাকা শহর ও শহরতলী অপারেশন দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ঢাকাকে গুঁড়িয়ে দিয়ে তা করায়ত্ত করার দায়িত্ব ছিল তার উপর। হামুদুর রহমান কমিশনের নিকট লে. কর্নেল করার দায়িত্ব ছিল তার উপর। হামুদুর রহমান কমিশনের নিকট লে. কর্নেল আহম্মদ খান সাক্ষ্য দিয়েছেন যে আবরার যথাসম্ভব এই নির্দেশ পালন করেছে।
ব্রিগেড কমান্ডার আবরারের নির্দেশে ১৮ পাঞ্জাব, ২২ বেলুচ, ৩২ পাঞ্জাবের সমন্বয়ে গঠিত একটি সংযুক্ত দল ২৫ মার্চ দিবাগত মধ্যরাতে জগন্নাথ হলে অবস্থানরত নিরস্ত্র নিরপরাধ ছাত্র শিক্ষক কর্মচারীদের উপর গণহত্যা চালায়। তার নেতৃত্বে হত্যাযজ্ঞের পর জগন্নাথ হল মাঠে বড় বড় গর্ত করে তাতে সব লাশ আক্রমণ করে এবং ২ হাজার পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে পুলিশ লাইন করায়ত্ত করে। ১৮ পাঞ্জাব নবাবপুর এলাকা ও পুরানো ঢাকায় হামলা চালিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের বহু লোককে হত্যা করে, অনেক হিন্দু বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে এবং হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা ধংস করে। ২২ বেলুচ পিলখানা আক্রমণ করে ৫ হাজার বাঙালি ইপিআর সদস্যকে হত্যা করে।
আবারারের অধীন ১৩ ফ্রন্টিয়ার ফোর্স, রিজার্ভ বাহিনী হিসাবে ক্যান্টমেন্ট প্রতিরোধে অংশগ্রহণ করে।
ঢাকা জয়দেবপুর ছিল দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট। জয়দেবপুর পাকিস্তানীদের নিয়ন্ত্রণে আসার পর তারা এখানকার রাজাবাড়িকে নির্যাতন ও হত্যা কেন্দ্রে পরিণত করে। বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য মানুষকে ধরে এনে নির্যাতন ও হত্যা করে রাজবাড়ির আশেপাশে পুঁতে রাখে। এসব হত্যাকাণ্ডের নেতৃত্বে দেয় ব্রিগেডিয়ার জাহানজেব আবরাব। ১৪ মে, ১৯৭১ তার বাহিনী জয়দেবপুর ১৫১ জন স্থানীয় লোক হত্যা করে। এ ছাড়াও এখানে আশ্রয়গ্রহণকারী নাম না জানা অনেককে তারা গুলি করে হত্যা করে। হামুদুর রহমান কমিশনের রিপোর্ট থেকে জানা যায় ব্রিগেডিয়ার আবরার জয়দেবপুরের সকল বাড়িঘর ধ্বংস করার নির্দেশ দিয়েছিল।
হামুদুর রহমান কমিশনের সাক্ষ্যে ব্রিগেডিয়ার শাহ আবদুল কাশিম জানায় যে ২৫ মার্চ রাজপথে কোনো খণ্ড যুদ্ধ হয়নি। সামরিক অপারেশনের সময় ৩২ পাঞ্জাব, ২২ বেলুচ ও ১৮ পাঞ্জাবের সেনা সদস্যরা ক্রোধ ও প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে কাজ করছিল।
অতএব ৩২ পাঞ্জাব, ২২ বেলুচ ও ১৮ পাঞ্জাবের ব্যাটেলিয়ান কমান্ডারসহ ৫৭ ব্রিগেডের অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার আবরাবকে অপারেশন সার্চলাইট সংক্রান্ত্র হত্যাযজ্ঞ, ক্ষয়ক্ষতি, ধ্বংসাত্মক তৎপরতা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের কারণে অভিযুক্ত করা যায়।
[১৪] ডা. এম এ . হাসান

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত