You dont have javascript enabled! Please enable it!

জাঙ্গালিয়া এ্যামবুশ (১৫/১৬ এপ্রিল’ ৭১) কুমিল্লা

জাঙ্গালিয়া এলাকাটি কুমিল্লা জেলার সদর থানার অন্তর্ভূক্ত। এপ্রিল মাসের ১৫/১৬ তারিখে পাকিস্তানী বাহিনীর একটি বিরাট কনভয় প্রায় ৩০টি গাড়িতে সৈন্য-সামন্ত নিয়ে লাকসামের দিকে রওয়ানা হয়। ক্যাপ্টেন মাহাবুবের নেতৃত্বে ৪ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ‘বি’ কোম্পানি এবং স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের পাকিস্তানী সেনাদের এই দলটিকে দুপুর ১২টায় জাঙ্গালিয়ার কাছে এ্যামবুশ স্থানে পাকিস্তানী কনভয়টি আসার সাথে সাথে মুক্তিযোদ্ধারা গুলি ছুঁড়তে থাকে এবং প্রায় ৫ ঘণ্টা উভয়পক্ষে গুলিবিনিময় হয়। মুক্তিবাহিনীর তীব্র আক্রমণে পাকিস্তানী সেনারা পর্যুদস্ত হয়ে পিছনে ফিরে যেতে বাধ্য হয়। এই সংঘর্ষে ক্যাপ্টেন মাহবুব, লেফটেন্যান্ট দীদার ও লেফটেন্যান্ট ইমাম-উজ-জামান যথেষ্ট কৌশল ও রণনিপুণতার পরিচয় দেয়। স্থানীয় জনসাধারণও ৪ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কোম্পানিকে যথেষ্ট সাহায্য সহযোগিতা করেন। ক্যাপ্টেন মাহবুব রাস্তার পুর্বাপাশে তাঁর সৈন্যদের নিয়ে এ্যাম্বুশ করে বসেছিলেন। যখন শত্রুদের কনভয় তাঁর এ্যাম্বুশের মাঝে পরে যায় তখন তাদের অপর গুলি ছুঁড়তে থাকেন। এতে শত্রুর একটা গাড়ি রাস্তা থেকে নিচে পরে যায়। বাকি গাড়ি থেকে পাকিস্তানী সেনারা লাফালাফি করে নিচে নামার চেষ্টা করে। এতে প্রচুর হতাহতের ঘটনা ঘটে। জে সব পাকিস্তানী সেনা গাড়ি থেকে ভালভাবে নামতে পেরেছিল তারা রাস্তার পশ্চিম দিকে গিয়ে একত্র হয় এবং ক্যাপ্টেন মাহাবুবের উপরে আক্রমণের প্রস্তুতি নেয়। লেফটেন্যান্ট দীদার আলমও রাস্তার পশ্চিম পাশে সৈন্য নিয়ে তৈরি ছিল। পাকিস্তানীরা পজিশন নেয়ার মূহুর্তেই লেফটেন্যান্ট দীদার তাদের ওপর আক্রমণ করে বসে। হানাদার সৈন্যরা দুদিক থেকে আক্রমণ মুখে পরে দিশেহারা হয়ে যায়। নিজেদের হয়াহত দেখে মনোবোল একেবারেই হারিয়ে ফেলে এবং তারপর ৩/৪টি গাড়ি ধংসাবস্থায় রেখে কুমিল্লার দিকে পালিয়ে যায়।
[৫৫] রিয়াজ আহমেদ

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!