জঙ্গির অপারেশন, নারায়ণগঞ্জ
১৯৭১ সালে নারায়ণগঞ্জের কাঞ্চন শিল্পাঞ্চলের আশরাফ জুট মিলে পাকসেনারা ক্যাম্প স্থাপন করেছিল। পাকসেনারা আশরাফ জুট মিলের একটি গানবোট নিয়ে প্রায়শ শীতলক্ষ্যা নদীরে টহল দিত। সে সময় দশদিন অন্তর অন্তর উক্ত ক্যাম্পের সেনাদল ক্যাম্প পরিবর্তন করত। শীতলক্ষ্যা নদীর উভয় তীরে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের সুনির্দিষ্ট তারিখ জানতে পেরে একটি সফল অপারেশনের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধারা শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্বতীরে দুটি ও পশ্চিম তীরে তিনটি স্থানে জঙ্গির ফ্রামের পূর্ব পাশে সুবিধাজনক স্থানে বাঙ্কার স্থাপন করে, মোঃ এনায়েত আলীর নেতৃত্বে অবস্থান নেয়। ১৯৭১ সালে ২৫ সেপ্টেম্বর বিকাল ৩টায় ১৯ সদস্য বাহী পাক গানবোটটি শীতলক্ষ্যা নদীতে মুক্তিযোদ্ধাদের দৃষ্টিগোচর হয়। গানবোটটি যখন শীতলক্ষ্যা নদীর উভয় তীরে অবস্থানরত বাঙ্কারের মধ্যবর্তী স্থানে পৌঁছায় তখন মুক্তিযোদ্ধাদের একযোগে ব্রাশফায়ার শুরু করে। পাক্সেনারাও পাল্টা ফায়ারিং করে কিন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের আকস্মিক সম্মিলিত ক্রস ফায়ারে গানবোটের ১৭ জন পাকসেনা ও গানবোট চালক সবাই নিহত হয়। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সবাই অক্ষত থাকেন। জাঙ্গির অপারেশনে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- মুক্তিযুদ্ধ এনায়েত আলী, কমান্ডার মেজবাহ উদ্দিন আহম্মেদম রতন, বিল্লাল হোসেন, আবু জাহান, রেফায়েত উল্লাহ, দিল মোহাম্মদ, আঃ রউফ, মনিরুজ্জামান খান, সিরাজ, মান্নান, নাসির, রঞ্জিত কুমার, সন্তোষ, আঃ রব, আফজাল হোসেন, আঃ রহম, ইসহাক প্রমুখ।
[৫৯৪] তানজিলা তওহিদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত