চারঘাটি সেতু আক্রমণ, ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ থেকে জামাল্পুরের দিকে পাকবাহিনীর চলাচল বাধাগ্রস্থ করার লক্ষ্যে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে ময়মনসিংহ-জামালপুর পাকা রাস্তায় অবস্থিত গুরুত্বপুর্ন চরাঘাটি সেতুটি ধ্বংস করা হয়। চরাঘাটি সেতু ধ্বংস এই অঞ্চলে পাকবাহিনীর চলাচলকে বাধাগ্রস্থ করে তোলে।
আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে মুক্তিবাহিনীর গ্রুপ কমান্ডার আবদুল মজিদ এক প্লাটুন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে জামালপুর এলাকায় আসেন। চরাঘাটি সেতু ধ্বংসের লক্ষ্যে তিনি স্থানীয়ভাবে খবরা-খবর নিতে চেষ্টা চালন। প্রাপ্ত তথ্য মতে, এই সময়য় সেতু পাহারায় স্থানিয়ভাবে নিয়োজিত রাজাকার এবং পুলিশ দায়িত্বরত ছিল। রাজাকারেরা পাহারা সম্বন্ধে খুব সতর্ক ছিল না। পুলিশ সদস্যরা প্রায় সম্য ক্যাম্পের বাইরে অবস্থান করত।
গুরুত্বপূর্ণ এই সংবাদে গ্রুপ কমান্ডার আবদুল মজিদ দুই দিক দিয়ে এই ক্যাম্পে আক্রমণ এবং আরেকটি দল দিয়ে সেতুটি উড়িয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী মধ্যরাতে মুক্তিবাহিনী ক্যাম্প আক্রমণ করলে বেশিরভাগ রাজাকার আত্মসমর্পণ করে এবং অনেক অস্ত্র ফেলে গ্রামের মধ্যে পালিয়ে যায়। এই যুদ্ধে গোলাম রব্বানী নামে ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাতবরণ করেন। ১৭টি অস্ত্রসহ বেশ কিছু গোলাবারুদ মুক্তিবাহিনী হস্তগত হয়।
এই যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধারা হলেন ডা. বাবার আলী, মতিউল ইসলাম বেগ, আবদুল মজিদ, ফরহাদ হোসেন, আবদুল হালিম, গিয়াস উদ্দিন, ডা. মাসুদ, জিয়াউল হক, শামসুল আলম, গোলাম রব্বানী (শহীদ) জয়নাল আবেদীন, মকবুল হোসেন, আব্দুল আলীম, মমতাজ আলী, কাশেম আলী ফকির, আব্দুল আজিজ, নূর মোহাম্মদ, কিতাব আলী, আবু মনছুর, শাহেদ আলী, মতিউর রহমান, জালাল উদ্দিন আরনেস আলী, আব্দুর রহিম, সিরাজ আলী, আবুল হোসেন, নূর আহম্মেদ, আবুদল কুদ্দুস খাঁন, আব্দুল হামিদ খাঁন, আফছার আলী, আলাউদ্দিন, আমজাদ আলী, দীপক চন্দ্র দাস, আব্দুস সামাদ, নূরুল হক, ফিরোজ আলী, লিয়াকত আলী, মফিজ উদ্দিন, নঈম উদ্দিন, নৃপ্নে চন্দ্র দাস, আবদুল বাছেদ আকন্দ, খুরশেদ, আকতার আলী, শামসুল হক, আনিসুর রহমান, শাহজাহান, আব্দুল করিম, আব্দুল মজিদ, ওমর ফারুক, বিল্লাল হোসেন, নূরুল ইসলাম, নাসির উদ্দিন, মফিজ উদ্দিন, হাবিবুর রহমান, হাছেন আলী, নাস্যার উদ্দিনর সরকার, খুরশেদ আলম, আকরাম হোসেন প্রমুখ।
[৫৯৫] ফিরোজ খায়রুদ্দিন
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত