চন্দন্দিয়া অপারেশন-১, নরসিংদী
[অংশগ্রহণকারীরা বর্ননা]
নরসিংদী থেকে শিবপুর আসার পথে পুটিয়া বাজারের দেড় কিলোমিটার উত্তরে শাশপুর চৌরাস্তার দক্ষিণ পূর্ব পাশের চন্দন্দিয়া গ্রাম অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের সময়য় পাকবাহিনী পুটিয়া বাজার ও শিবপুর বালিকা বিদ্যালয়ে ক্যাম্প স্থাপন করেছিল। পাকবাহিনীর এই ক্যাম্পটি আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেয় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। ক্যাপ্টেন মান্নান এর নেতৃত্বে পাকসেনা ক্যাম্প আক্রমণের উদ্দেশে মুক্তিযোদ্ধারা চন্দন্দিয়া গ্রামের সম্মুখ অংশে অ্যামবুশের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর মান্নান খানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল শাশপুর চৌরাস্তার দুই প্রান্তে এবং মজুন মৃধার নেতৃত্বে আরেকটি দল চন্দন্দিয়া পুলের কাছে অবস্থান নেয়। মুক্তিযোদ্ধাদের তৃতীয় দলটি আব্দুল আলী মৃধার নেতৃত্বে চন্দন্দিয়ার পূর্বদিকে জাঙ্গালিয়ায় অবস্থান নেয়। কিন্ত স্থানীয় রাজাকারদের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের এই অ্যামবুশের অবস্থান সম্পর্কে পাকবাহিনী পূর্বেই জেনে যায়, তাই পাকিস্তানী সেনারা শাশপুরের রাস্তায় না এসে হঠাৎ করে চন্দন্দিয়ায় অবস্থানরত মজুন মৃধার দল্কে পেছন থেকে আক্রমণ করে। অতর্কিত এই আক্রমণে ভয় না পেয়ে মজুন মৃধা তাঁর দল নিয়ে সাহসের সাথে পাকিস্তানী বাহিনীর মোকাবেলা করতে থাকে। কিন্ত শত্রুর আক্রমণ ক্রমশ তীব্রতর হতে থাকে, একসময় মজুন মৃধা তাঁর দল্কে পিছু হটতে নির্দেশ দেন। এসময় মুক্তিযোদ্ধা মানিক ও ইদ্রিস গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। ইতোমধ্যে মজুন মৃধার দলে অপর আক্রমণের খবর পেয়ে মান্নান খান তাঁর দল নিয়ে চন্দনদিয়ায় চলে আসেন। ফলে পিছু হটার সিদ্ধান্ত পাল্টে মুক্তিযোদ্ধারা গুলি করতে করতে সামনে এগিয়ে যান। যুদ্ধের একপর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখসমরে পবর্তীণ হন। কিন্ত যুদ্ধ করতে করতে একসময় মুক্তিযোদ্ধাদের গুলি শেষ হয়ে আসলে তাঁরা পিছিয়ে আস্তে বাধ্য হন। মুক্তিযোদ্ধা নজরুল এ যুদ্ধে পাকবাহিনীর হাতে ধরা পড়েন।
[৫৯৪] তাঞ্জিলা তওহিদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত