ঘোনাবাড়ীর যুদ্ধ, টাঙ্গাইল
১৯৭১ সালের ৬ই অক্টোবর টাঙ্গাইল মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় বেদনার ও গৌরবের দিন। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফজলুর নেতৃত্ব তিনশ মুক্তিযোদ্ধা চারদিন ধরে বল্লার শত্রুঘাঁটি অবরোধ করে শত্রুর উপর আঘাত হেনে চলেছে। বল্লার দখল তাদের চাই-ই চাই। ৬ই অক্টোবর দুপুরে ১৫/২০ জন মুক্তিযোদ্ধা ঘোনাবাড়ির একটি বাড়িতে খেতে বসেছে। এই সময় একজন হানাদার দালালের নিকট প্রাপ্ত সংবাদে শত্রুরা বাড়িটি ঘিরে ফেলে। পাহারারত মুক্তিযোদ্ধার সংবাদে খাওয়া রেখে অস্ত্র হাতে দুশমনের মোকাবেলায় মুক্তিযোদ্ধারা তিনভাগে বিভক্ত হয়ে তিন দিকে ছোটে। এ সময় ১৬/১৭ জন শত্রু ক্রলিং করে পশ্চিম দিক থেকে বাড়িটিতে উঠছিল। মোমেন ও হানিফ দৌড়ে গিয়ে একটু আড়াল দিয়ে দশ-বার গজ দূরে থেকে শত্রুর উপর গুলি ছোড়ে। মুক্তিযোদ্ধাদের দুঃসাহসিক আক্রমণে আটজন শত্রু নিহত ও চারজন মারাত্মকভাবে আহত হয়। অবস্থা ভয়াবহ এবং প্রতিকূল দেখে হানাদাররা আড়াল থেকে বের হয়ে আরও এগিয়ে হানাদারদের উপর গুলি চালায়। আকস্মিক গুলি মোমেন ও হানিফের বুক ভেদ করলে বাড়ির পশ্চিম দিকে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। এ সময় রকেট ও আমীর এগিয়ে এসে পশ্চিম দিকের অবস্থা সুদৃঢ় করে। প্রায় দেড়ঘন্টাব্যাপী এই যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর দুজন শহীদ ও তিনজন আহত হয়।
[৫৯৫] ফিরোজ খায়রুদ্দিন
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত