গৌরনদীর যুদ্ধ, বরিশাল
আমতলী-জুনাইহারের পর বরিশালের গৌরনদীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প শক্তিশালী ছিল। গৌরনদী থেকে নির্বাচিত জাতীয় পরিষদ সদস্য আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের নেতৃত্বে গৌরনদী কলেজ মুক্তিবাহিনী ক্যাম্প প্রতিষ্ঠিত হয়। গৌরনদীর এম পি এ আব্দুল করিম সর্দার, আওয়ামী লীগ সভাপতি সৈয়দ মতলুবুর রহমান গৈলা, মতি তালুকদার আগৈলঝরার ইসহাক মতিন, গৌরনদী কলেজের ভিপি আব্দুর রফিক সেরনিয়াবাত, ছাত্রনেতা নুরুজ্জামান, ফজলুর রহমান, আব্দুর রব, কেশব প্রমুখ মুক্তিবাহিনী প্রতিষ্ঠা ও গৌরনদী-ভুরঘাটায় প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রধান সংগঠক ছিলেন। গৌরনদী কলেজ ক্যাম্পের ট্রেনিং এর দায়িত্বে ছিলেন আবুল কাসেম আবুল কাসেম ১৯৩৮ সনে বাবুগঞ্জ থানায় রাজগুরু গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৫ সনে সেনাবাহিনিতে যোগ দেন। ১৯৬০ সনে চাকুরি ছেড়ে দিয়ে বি এ বি এল পাশ করেন। ১৯৭০ সালে তিনি ভাষাণচর স্কুলের হেডমাস্টার ছিলেন। গৌরনদীর আওয়ামী লীগ নেতাদের আহ্বানে তিনি ১৩ মার্চ ক্যাম্পের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। প্রায় ৩ হাজার ছাত্র যুবক ট্রেনিং গ্রহণ করে। ৩০ জন প্রশিক্ষক ছিলেন। সেনাবাহিনীর হাবিলদার আবুল হোসেন, আব্দুল কাদের প্রমুখ প্রধান সামরিক প্রশিক্ষক ছিলেন। তারা গৌরনদীর থানার অস্ত্র নিয়ে নেয়। ভারী অস্ত্র ছিল না। তাই অস্ত্রের সন্ধানে আবদুর রব সেরনিয়াবাত ও বরিশাল আওয়ামী লীগ এটা ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ফরিদপুর হয়ে কুষ্টিয়ার মেহেরপুর যান এবং মেজর ওসমান ও ক্যাপ্টেন কে এন হুদার সাথে সাক্ষাৎ করেন। পাকবাহিনীর আগমনের জন্য তাদের পক্ষে অস্ত্র সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। ২৪ এপ্রিল ফরিদপুর ও মাদারীপুরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ২৫ এপ্রিল আবুল কাশেম আবুল হোসেন ও আবদুল কাদেরের নেতৃত্বে দুটি অগ্রবর্তী দল ভুরঘাটা পুলের নিকট প্রেরণ করেন। দুপুর ১২টার সময় কলেজ থেকে গুলি শব্দ শোনা যায়। ক্যাম্প থেকে ৪ মাইল দূরে কটকস্থলে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সংঘর্ষে ৫ জন মুক্তিবাহিনী নিহত হন। কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা আহত ও শতাধিক গ্রামবাসী নিহত হন। ঠিক এই সময়য় পাকবাহিনীর আগমনের জন্য তাদের পক্ষে অস্ত্র সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। ২৪ এপ্রিল ফরিদপুর ও মাদারীপুরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ২৫ এপ্রিল আবুল কাশেম আবুল হোসেন ও আবদুল কাদেরের নেতৃত্ব দুটি অগ্রবর্তী দল ভুরঘাটা পুলের নিকট প্রেরণ করেন। দুপুর ১২টার সময়য় কলেজ থেকে গুলির শব্দ শোনা যায়। ক্যাম্প থেকে ৪ মাইল দূরে কটকস্থলে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এই সংঘর্ষে ৫ জন মুক্তিবাহিনী নিহত হন। কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা আহত ও শতাধিক গ্রামবাসী নিহত হন। ঠিক এই সময়য় পাকবাহিনী তালতলী-জুনাহার আক্রমণ করে। ১৫টি পাক বাহিনীর গাড়ি অগ্রসরহচ্ছে। এক গাড়ি থেকে আর এক গাড়ির দূরত্ব ৩০০ গজ। রাস্তার দু’ ধারে তারা ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয় এবং জনগণকে হত্যা করে। পাকসেনারা বাটাজোড় ও শিকারপুর বন্দর পুড়িয়ে ফেলে। তারা সন্ধ্যার পূর্বে বরিশাল শহরে পৌঁছে।
[৫৭] সিরাজ উদ্দীন আহমেদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত