গুলজারিন, নেভাল কমান্ডার
গণি, নেভাল ক্যাপ্টেন
আসলাম, নেভাল ক্যাপ্টেন
শামস-উল জামান, লে. কর্নেল (২২ এফ এফ, পিএ-৪৭৪৫)
আব্দুল্লাহ, কর্নেল
জাফর, কর্নেল
শামস, কর্নেল
বেলায়েত শাহ্, মেজর
আশফাক আহমেদ চীমা, মেজর (৩৯ বেলুচ, পিএ-৭৫৩০)
শাব উদ্দিন, ক্যাপ্টেন
ইশ্তিয়াক, ক্যাপ্টেন
খালেক, ক্যাপ্টেন
সুলতান, ক্যাপ্টেন
জাফর, ক্যাপ্টেন
জলিল, ক্যাপ্টেন
গুলফারাজ খান আব্বাসী, ক্যাপ্টেন (২২ এফএফ, পিএসএস-৯৪৪০)
কোরবান, লেফটেন্যান্ট
যে যে ডিল, কর্নেল (২৬ বেলুচ)
নাসের, মেজর
আওলাদ, ক্যাপ্টেন
খুলনা, সাতক্ষীরা
অপরাধঃ বৃহত্তর খুলনা এলাকা ছিল জেনারেল আনসারীর ৯ম ডিভিশনের অধীনে, যশোর এলাকায় দায়িত্বরত ১০৭ বিগ্রেড, ২২ এফএফ ও ২৭ বেলুচসহ ৯ম ডিভিশনের অধীনস্থ সকল সকল পাকসেনাসহ উপরোক্ত অফিসাররা খুলনার গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য দায়ী।
২৭ বেলুচ, যুদ্ধের শেষের দিকে যশোর থেকে খুলনা যায়। খুলনাতে ইপিসিএএফ, রেঞ্জার রাজাকারবাহিনীর একটি সম্মিলিত এডহক বিগ্রেড আর্মিদের সহযোগিতায় ব্যাপক গণহত্যা, নির্যাতনসহ নানাবিধ যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ঘটায়। এসকল বাহিনীর পরিচালক হিসাবে মেজর জেনারেল মোহাম্মদ জামশেদ দায়ি।
নৌবাহিনীর কমান্ডার গুলজারিন খুলনা এলাকায় নৌপথে যে সমস্ত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় তার জন্য দায়ী।
এপ্রিলে চরের হাটে যাত্রীভর্তি লঞ্চ থামিয়ে তাঁদের মালামাল লুট করে প্রায় পাঁচশ’ লোককে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের নেতৃত্ব দেয় নৌকমাণ্ডার গুলজারিন। এ ছাড়াও সে খুলনা এলাকার প্রায় সকল হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল।
ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী বাংলার সাড়ে চার লক্ষ নির্যাতিত ও ধর্ষিতাদের একজন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানী অফিসাররা তার উপর যে পাশবিক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায় সেই ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি উপরোল্লিখিত অপরাধী অফিসারদের নাম বলেন। তিনি বলেন, “সিনিয়র ও জুনিয়র কোনো আর্মি অফিসারের হাত থেকেই আমি রেহাই পাইনি। গুলজারিন ছিল সাংঘাতিক নারীলোলুপ, ফেরদৌস বলেন, গুলজারিন তাঁকে বলেছিল “তুমি জান না, আমার হাতে এসে কোনো মেয়ে ফিরে যায় না।“
সাক্ষীঃ ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী।
২০ এপ্রিল সাতক্ষীরা থেকে মিলিটারিদের ৩/৪টা গাড়ি চুকনগরে প্রবেশ করে এলোপাথাড়ি গুলি বর্ষণ করতে থাকে। এখানে অবস্থানরত প্রায় ১০ হাজার শরণার্থিকে এরা হত্যা করে। স্থানীয়দের মধ্যে ছিলেন মালথিয়ার সুরেন ভুষণ, চুকনগরের কালাচাঁদ দাসসহ অনেক।
সাক্ষীঃ গনেশ চন্র তরফদার, এরশাদ আলী মোড়ল, কেষ্ট দাস প্রমুখ। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনীর এই সদস্যরা গল্লামারিতে বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার লোক ধরে এনে হত্যা করেছে। গল্লামারি রেডিও সেন্টারকে তাঁরা ধর্ষণ ও নির্যাতন কেন্দ্রে পরিণত করে।
সাক্ষীঃ আব্দুল গফফার, মজিবর রহমান, আব্দুস সাত্তার শিকদার প্রমুখ। বাটিয়াঘাটাতেও এরা অনুরূপ গণহত্যা চালায়।
বাগেরহাটেও এরা ব্যাপক গণহত্যা চালায়। গোটাপাড়াতে এরা হত্যা করে তোরাব আলী, প্রফুল্ল চন্দ্রসহ বহু লোককে।
সাক্ষীঃ এসএম আব্দুল ওয়াহাব, হেকমত আলী হালদার প্রমুখ।
আন্দাপাড়াতে এয়া ১৯ জনকে (মতান্তরে ১৭ জন বাজারে এনে হত্যা করে। স্থানীয়রা জোনা মোল্লা, আকবর হাজীসহ ১৬ জনের একটি তালিকা তৈরি করে। সাক্ষীঃ আকরাম উদ্দীন মোল্লা।
চিতলমারীতে রাজাকারদের সহায়তায় এই পাকসেনারা ৭০/৮০ জনকে হত্যা করে।
সাক্ষীঃ শ্রীকৃষ্ণ দাস রানা।
খলিশাখালী ও চর খলিশাখালীতে এরা ৫০০ জনকে হত্যা করে।
সাক্ষীঃ ধীরেন্দ্রনাথ মণ্ডল
সাতক্ষীরা অঞ্চলের বিভিন্ন নির্যাতন কেন্দ্রে বন্দীদের হত্যা ও নির্যাতনের নায়ক কর্নেল জে জে ডিল, মেজর নাসের ও ক্যাপ্টেন আওলাদ। ক্যাপ্টেন আব্বাস সাতক্ষীরা শহরে পিএন স্কুল ক্যাম্পের হত্যাযজ্ঞ, নির্যাতন ও নারী নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ছিল।
সাক্ষীঃ ক্যাপ্টেন (অবঃ) সৈয়দ সুজাউদ্দীন আহমেদ।
খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাটসহ এ অঞ্চলে সংঘটিত গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য উপরোক্ত পাক অফিসার ও সেনাদের অভিযুক্ত করা যায়।
[১৪] ডা.এম.এ.হাসান
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত