You dont have javascript enabled! Please enable it!

গাজীপুরের যুদ্ধ-১, চাঁদপুর
[অংশগ্রহণকারীর বিবরণ]

১৯৭১ সালের ২৭ এপ্রিল চাদপুরের ফরিদগঞ্জ থানার গাজীপুর নামক স্থানে তৎকালীন মুক্তিবাহিনীকে কমান্ডার ক্যাপ্টেন জহিরুল হক পাঠান (অবঃ টিজে) ও তার সহযোদ্ধারা সাথে পাকবাহিনীর প্রচণ্ড লড়াই হয়। উল্লেখ করতে হয় এই লড়াই থেকে শুরু হয় চাঁদপুর অঞ্চলে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধের অগ্রযাত্রা। এই যুদ্ধে যে কয়জন চৌকস যোদ্ধা ছিলেন তারা হলেন কমরেড কলিমউল্যা ভূঁইয়া, নায়েব সুবেদার আঃ হক (মতলব), সুবেদার রব (ফরিদগঞ্জ), জয়নাল চৌধুরী, সুবেদার পন্ডিত আলী (নোয়াখালী), সুবেদার জহুরুল ইসলাম (বরিশাল), হাবিলদার আঃ রশিদ (কাসারা) প্রমুখ। সেদিন মুক্তিযোদ্ধারা তিন দিক থেকে পাক বাহিনীকে সাঁড়াশি আক্রমণ করে। মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ছিল মাত্র ২টি এল এম জি, রাইফেল ও ১টি ২ মর্টার। মুক্তিবাহিনী খবর পেল প্রচুর গোলা বারুদ ও হাতিয়ার নিয়ে একটি লঞ্চ ফরিদগঞ্জ আসছে। মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণের সুবিধা দেখে স্থানে হিসেবে গাজীপুরকে বেছে নেয়। মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে সেদিন ১০/১২ জন পাকসেনা খতম হয়। ৪/৫ জন কোনো প্রকারে জীবন নিয়ে ধানুয়া হয়ে ফরিদগঞ্জ পৌঁছে। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে লঞ্চটি গাজীপুর সেখেরটেক নামক স্থানে নিমজ্জিত হয়। পরের দিন হাজার হাজার জনতা নিজ উদ্যোগে কোমরে রশি বেঁধে লঞ্চটি পাড়ে তেনে তোলে। এই যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা চতুর্দিকে ডিফেন্স বসিয়ে জনতাকে সাহস ও উৎসাহ দেয়। এই যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা ২টি হেভি মেশিনগান, ১টি ৩ ইঞ্চি মর্টার, ১টি রকেট লাঞ্চার, ৪ টি চাইনিজ এলএমজি ও কয়েকটি চাইনিজ রাইফেল এবং প্রচুর বুলেট দখল করে। এই বিজয়ে জনতার আনন্দ উল্লাস আর দেখে কে। তারা গাজীপুরের আকশ বাতাস কাঁপিয়ে শ্লোগান তুলে জয় বাংলা জনতা ৬/৭টী লাশ পানিতে নেমে টেনে পাড়ে নিয়ে আসে। ক্ষোভে দুঃখে জনতা তাদের বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে গুঁতিয়ে নাড়িভুঁড়ি বের করে ফেলে। সেদিন ধানুয়া থেকে তারা পাল্টা আক্রমণ করলেও মুক্তিযোদ্ধাদের সামনে ১ ঘণ্টাও টিকে থাকতে পারেনি।
[২৪] মোঃ দেলোয়ার হোসেন খান

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!