You dont have javascript enabled! Please enable it!

গাজীরহাটের যুদ্ধ, খুলনা

গাজীরহাট ইউনিয়নে পরপর তিনটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়। ১৩ অক্টোবর ৭১ তারিখে আত্রাই ও গঙ্গা নদীর ত্রি-মোহনায় ত্রিমুখী যুদ্ধ হয়। উত্তর-পশ্চিম পাশে অবস্থান নেয় রাজাকার ও কমিউনিস্টরা, দক্ষিণে পাকবাহিনী এবং উত্তর-পূর্ব পাশে মুক্তিযোদ্ধারা। প্রায় দু’ঘন্টা যাবৎ এ যুদ্ধ চলে। এক সময়ে শত্রুপক্ষের প্রবল আক্রমণের মুখে টিকটে না পেরে মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। এই যুদ্ধে রাধামাধবপুরের মঙ্গল খার পুত্র মুক্তিযোদ্ধা সুলতান খাঁ শহীদ হন। তবে শত্রুপক্ষের ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল জাফর শেখ পিং আফতাব শেখ, লিয়াকত শেখ পিং নূরো শেখ, শেখ সাহেব আলী (সোনালী জুট মিল স্কুলের শিক্ষক) ও রুহোল শেখ পিং ইব্রাহীম শেখ। সর্বসাং আড়াংঘাটা।
দ্বিতীয় যুদ্ধ শুরু হয় নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে ক্যাটলা গ্রামে। নিত্যদিনের মত রাজাকাররা গানবোট নিয়ে নদীতে টহল দিচ্ছিল। যখন তারা হাতিয়ার খালের নদীর মোহনায় আসে সেই সময়ে ক্যাটলা গ্রামে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের রাইফেল গর্জে ওঠে। শুরু হয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ। যুদ্ধের এক পর্যায়ে মোল্লাডাঙ্গার আব্দুল আজিজ মোল্যার পুত্র মুক্তিযোদ্ধা এম. এ. রশিদ রাজাকারদের গুলিতে আহত হলে মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান ছেড়ে পালিয়ে যায়। এই সময়ে রাজাকাররা দুইজন হিন্দুকে মুক্তিযোদ্ধাদের গোয়েন্দা সন্দেহে হাত পা বেঁধে নদীতে ডুবিয়ে মারে।
তৃতীয় যুদ্ধ শুরু হয় নভেম্বর মাসের শেষের দিকে। গাজীরহাট মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প রাজাকাররা হামলা করলে অতর্কিত এই আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধারা দিশেহারা হয়ে পড়ে। সামান্য প্রতিরোধের পর মুক্তিযোদ্ধারা ক্যাম্প পরিত্যাগ করে গ্রামের মধ্যে পালিয়ে যায়। অতপর শূন্য কাম্প শত্রুরা পুড়িয়ে দেয়। গ্রামের লোকজন প্রাণভয়ে অন্যত্র পালিয়ে যায়। এই অতর্কিত আক্রমণে আব্দুল বারিক মোল্যার পুত্র মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্প কমান্ডার আব্দুল হামিদ মোল্যা ও তার পুত্র বুলু মোল্যা, মুজাম শেখের পুত্র মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার রহমান ও ইমানী মোল্যার পুত্র ধুলু মোল্যা শহীদ হন।
[১৮৮] মোঃ আবুবকর সিদ্দিকী

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!